রাজ্যে টেট দুর্নীতি নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। টেট বিষয়ক বিভিন্ন মামলা নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে চলছে তদন্ত। এর মধ্যেই টেটের শংসাপত্র না পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগে দুবার অর্থাৎ ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার্থীরা পাশ করার পরেও পর্ষদের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি শংসাপত্র বা টেট সার্টিফিকেট। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের পরীক্ষায় পাশ হওয়া প্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার পরীক্ষার্থী এখনও শংসাপত্র পাননি। যথারীতি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন টেট পাশ পরীক্ষার্থীরা।
২০১৪ এবং ২০১৭ সালের পরীক্ষার পর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ সময়। তা সত্ত্বেও কেন দেওয়া হলো না শংসাপত্র? পর্ষদের কাছ থেকে উত্তর চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এই বিষয়ে মামলাকারীদের আইনজীবীকে বিচারপতি নির্দেশ দেন ঠিক কি কারণে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে না তা সরাসরি পর্ষদ সভাপতির কাছ থেকে জেনে আসতে। তবেই এই মামলার শুনানি হবে। পরীক্ষার পর এতদিন কেটে যাওয়ার পরেও শংসাপত্র না পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। সমস্যা দেখা দিয়েছে ইন্টারভিউর আবেদনের ক্ষেত্রেও। সোমবার একই বিষয়ে মামলা করেন বেশ কিছুজন চাকরিপ্রার্থী। এ প্রসঙ্গে মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, “টেটের নম্বর বিভাজন সহ শংসাপত্র দেওয়া উচিত পর্ষদের, তবেই পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্ত নম্বর জানতে পারবেন, তাতে দুর্নীতির সম্ভাবনাও কমবে”।
আরও পড়ুনঃ ১২ লক্ষ ৯৫ হাজার পরীক্ষার্থীর সমস্ত ও এমআর শিট নষ্ট
সম্প্রতি রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে টেট পরীক্ষা এবং টেটের ইন্টারভিউর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। যেখানে টেট পাশ করলেই ইন্টারভিউর জন্য আবেদন করতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা। পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীরা যেকোনোও একবার টেটে পাশ করলেই ইন্টারভিউর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার জন্য বারংবার টেট পরীক্ষায় বসতে হবে না। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে আবেদনকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট পাশ প্রার্থীরা এখনও পর্ষদের পক্ষ থেকে পাননি টেট পাশ শংসাপত্র বা টেট সার্টিফিকেট। এতদিনেও শংসাপত্র না পাওয়ায় আবেদনের ক্ষেত্রে ধন্দে পড়েছেন তাঁরা। নতুন করে ইন্টারভিউর আবেদনের সময় দুটি পরীক্ষার মধ্যে কোনটির প্রাপ্ত নম্বর বেশি এবং কোন নম্বরটি দেবেন তা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। কারণ বিগত পরীক্ষার নম্বর জানা নেই তাঁদের।
এদিকে পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে টেট পাশ করলেই চাকরি পাবেন না চাকরিপ্রার্থীরা, টেটের লিখিত পরীক্ষায় পাশের পর ইন্টারভিউ তে পাশ করলে তবেই হবে নিয়োগ। অতএব ইন্টারভিউর ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের কাছে। এদিকে পর্ষদের শংসাপত্র সঠিক সময়ে না পাওয়ায় ইন্টারভিউর আবেদনে ধন্দে পড়েছেন বহু চাকরিপ্রার্থী। এবং এই সমস্যা নিয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন টেট পরীক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিষয়টি পর্যালোচনা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের মামলা করার অনুমতি দেন ও পর্ষদ সভাপতির সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা বলেন। এই মামলার আগামী শুনানি হবে বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোয়।