রাজ্যের সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য নেওয়া হলো অভিনব সিদ্ধান্ত। এবার নতুন ক্লাসে উত্তীর্ণ হলেই মিলবে বিশেষ সম্মান। এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ১৩ দফা গাইডলাইন। দীপাবলির পরই স্কুলে স্কুলে পাঠানো হবে নির্দেশিকা। স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে এই সম্মানের আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে “Graduation Ceremony”। ছাত্রছাত্রীরা এক ক্লাস থেকে পরবর্তী ক্লাসে পদার্পণ করলে বছরের নির্দিষ্ট দিনে পালন করা হবে এই Graduation Ceremony। সেইদিন উপহারের মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীদের বরণ করে নেওয়া হবে নতুন ক্লাসে। সাথে থাকবে পড়ুয়াদের নিজস্ব কিছু দায়িত্ব স্বীকার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান শিক্ষক, শ্রেনী শিক্ষক সহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা।
দীপাবলির পরেই ১৩ দফা গাইডলাইন সহ বিশেষ এই নির্দেশিকা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে পাঠানো হবে স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে। প্রতিবছর ২রা জানুয়ারি আয়োজন করা হবে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের। কার্যত পাঠন পাঠনের প্রতি পড়ুয়াদের আকর্ষণ বৃদ্ধি এই সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন শিক্ষকমহল। বাইরের দেশের বিদ্যালয়গুলিতে এবং এদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলেও বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত রাজ্যে প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুনঃ প্রাইমারি টেট সিলেবাস নিয়ে বিভ্রান্তিতে আবেদনকারীরা
স্কুল শিক্ষা দফতরের ১৩ দফা গাইডলাইনে যে বিষয়গুলি জানানো হয়েছে-
১) প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ বা তার পরের দিনগুলোতে আয়োজিত হবে “Graduation Ceremony”।
২) নতুন ক্লাসে পর্দাপণ করার পর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পক্ষ থেকে পড়ুয়াদের জন্য থাকবে এই বিশেষ সন্মান।
৩) শ্রেণী শিক্ষক/ শিক্ষিকা মিষ্টি ও চকোলেট দিয়ে নতুন ক্লাসে স্বাগত জানাবেন ছাত্রছাত্রীদের।
৪) শ্রেণী শিক্ষিক/ শিক্ষিকা নতুন ক্লাসের সব ছাত্রছাত্রীদের একসাথে স্বাগত জানাবেন।
৫) নতুন ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়া সব ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের নিজেদের পরিচয় দেবেন নিজেদের শ্রেণী শিক্ষিক/শিক্ষিকার কাছে।
৬) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকা বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের ইতিহাস গল্পের আকারে তুলে ধরবেন ছাত্রছাত্রীদের কাছে, এবং একইসঙ্গে সরকার কর্তৃক পড়ুয়ারা যে যে পরিষেবা পাবে, তাও অবহিত করা হবে।
৭) প্রতি বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফটো সেকশনে ছাত্রছাত্রীদের নাম, জন্মতারিখ, ফটো, রাখতে হবে।
৮) শ্রেণী শিক্ষিক/শিক্ষিকার সঙ্গে তোলা ছাত্রছাত্রীদের ছবিও রাখতে হবে সেই ফটো সেকশনে।
৯) প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকাকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি চিঠি প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীকে দিতে হবে।
১০) ক্লাসের বিভিন্ন বিভাগের মনিটর সিলেকশন করতে হবে এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
১১) এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের দলবদ্ধ পঠনপাঠনে বা “গ্রুপ লার্নিং” এর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এই সময়ের মধ্যে।
১২) ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে বসে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা সর্বাধিক সুবিধাজনক করতে হবে।
১৩) গোটা অনুষ্ঠানটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রস্তুত করে বিদ্যালয়ের বুকলেটে প্রকাশ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন বিজ্ঞপ্তি
সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের স্বার্থে রাজ্য সরকারের এই অভিনব সিদ্ধান্তে খুশি অভিভাবক থেকে পড়ুয়ারা। এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে অনগ্রসর বহু পড়ুয়ারা পঠন পাঠনে আকর্ষণ যেমন অনুভব করবে তেমনই প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন শিক্ষকমহল।