দিনের পর দিন রাস্তায় বসে ধর্ণা, অভুক্ত থেকে অনশন, আন্দোলনে পথে নামছেন চাকরিপ্রার্থীরা। দাবি একটাই, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ হোক। শিক্ষক হতে চেয়ে যুবক যুবতীদের রক্ত ঝরছে পথে। রাজ্যের এক প্রান্তে যখন এই ছবি তখন অন্য প্রান্তে শিক্ষক অভাবে বন্ধ হলো স্কুল। ঘটনাটি হাওড়ার বাঁকড়ার বরকনমাঠ আইডি জুনিয়র হাইস্কুলের। শিক্ষক অভাবে সেখানে আগেই বন্ধ হয়েছে আপার প্রাইমারি বিভাগ।
নিয়োগ দুর্নীতি ছড়িয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। শিক্ষা ব্যবস্থার কঙ্কালসার অবস্থায় জর্জরিত রাজ্যের বহু প্রতিষ্ঠান। শূন্যপদ পূরণের দাবিতে চলছে বিক্ষোভ, অনশন, ধর্ণা। বলপূর্বক ভাঙা হচ্ছে আন্দোলন, থামানো হচ্ছে স্লোগান। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক সর্বত্র একই চিত্র। এসবের বাতাবরণেই সামনে এল হাওড়ার বাঁকড়ার বরকনমাঠ আইডি জুনিয়র হাইস্কুলের কথা, যেখানে কার্যত শিক্ষক অভাবেই বন্ধ হলো স্কুল। পরপর চার শিক্ষকের অবসরের পর ২০২১ এর ডিসেম্বরে বন্ধ হয় স্কুলের আপার প্রাইমারি সেকশন। বর্তমানে জেলা স্কুল পরিদর্শকও স্বীকার করেন শিক্ষক অভাবের বিষয়টি।
আরও পড়ুনঃ ডিসেম্বরের শুরুতেই উচ্চমাধ্যমিকের প্র্যাকটিকাল
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যেখানে একাধিক জটিলতা অব্যাহত সেখানে শূন্যপদের সংখ্যাটা ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারই নজির হিসেবে সামনে আসছে বরকনমাঠ আইডি জুনিয়র হাইস্কুলের প্রসঙ্গ। যেখানে শিক্ষক না থাকায়, নিয়োগ না হওয়ায় বন্ধ হলো পঠনপাঠন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কথায়, ড্রপ আউটের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর স্থানীয়দের বক্তব্যে, ফাঁকা স্কুলবাড়ি হয়ে উঠেছে অসামাজিক কার্যকলাপের আঁতুড়ঘর।
রাজ্যে লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যত অন্ধকারে। নিয়োগ হবে কি হবে না তা নিয়ে বিভ্রান্তি তুঙ্গে। আদালতে চলছে একাধিক মামলা। করুণাময়ীর পর এক্সাইড মোড়, চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত শহর কলকাতা। পাশের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নিয়োগ হয়নি তাঁদের। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। অনেকে শুয়ে পড়ছেন গাড়ির তলায়। “নিয়োগ না হলে মৃত্যু” বলছেন তাঁরা। এহেন বাতাবরণে সেই শিক্ষকের অভাবেই স্কুল বন্ধ হওয়া কার্যতই শূন্যপদের দিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো বলেই মানছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এই পরিস্থিতির প্রতিকার কবে, তাও অজানা চাকরিপ্রার্থীদের।