স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয় কর্মশিক্ষার ৭৫০ পদে যে নিয়োগ কর্মসূচি গ্রহণ করতে চলেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন(এসএসসি) তা বর্তমানে বন্ধ করতে হবে। আপাতত দুদিনের জন্য নিয়োগ কর্মসূচি যেমন বন্ধ থাকবে তেমনই কোনোও প্রার্থীকে সুপারিশপত্র দিতে পারবে না এস এস সি।
সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে নিয়োগ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আসে এসএসসির তরফে। এরপর ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হয় কর্মশিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা। এবং ২০১৮ সালের মার্চ মাসে চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ সম্পন্ন হয়। এরপর চলতি বছরের কিছুদিন আগেই এসএসসির তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ কর্মসূচি গ্রহণের কথা জানানো হয়। ঘোষণা করা হয় ৭৫০ শূন্যপদের কথাও। এরপর ৩ নভেম্বর প্রকাশ পায় ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা। কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিষয়ে অপেক্ষরত শ্রেণীতে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের চাকরিতে যুক্ত করার কথাও জানানো হয় কমিশনের তরফে। সেই মতো সম্প্রতি শুরু হয় কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া। চাকরিপ্রার্থীরা যে এই কাউন্সিলিংয়ের পর সুপারিশপত্র গ্রহণ ও স্কুল নির্বাচন করতে পারবেন সেকথাও জানানো হয়।
চাকরির খবরঃ 2014 নম্বর তালিকায় ‘কুন্ডু’ বিতর্ক
এর পরেই এসএসসির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় আদালতে। মামলা করেন সোমা রায় নামের একজন চাকরিপ্রার্থী। তিনি দাবি করেন যথাযথ নম্বর থাকা সত্ত্বেও এসএসসির ওয়েটিং লিস্টে নাম রাখা হয়নি তাঁর। লিখিত পরীক্ষার ৫৪ ও অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২২ পাওয়ার পর তাঁর প্রাপ্ত নম্বর যেখানে হওয়া উচিত ‘৭৬’ সেখানে তাঁকে দেওয়া হয়েছে ‘৭২’। অ্যাকাডেমিক স্কোরে তাকে ২২ এর পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে ১৮। একই সাথে যোগ করা হয়নি ইন্টারভিউ (পার্সোনাল টেস্ট) এর নম্বর। মামলাকারী চাকরিপ্রার্থী সোমা রায়ের বক্তব্য তাঁর থেকে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা যেখানে স্থান পেয়েছেন তালিকায় সেখানে কেন নেই তাঁর নাম! এমনকি তাঁর থেকে কম নম্বর পাওয়া প্রায় ৬০ জন প্রার্থীর নাম সামনে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের আইনজীবীর বক্তব্য, তালিকায় উল্লিখিত প্যারা টিচার হিসেবে সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
তবে কমিশনের আইনজীবীর এহেন বক্তব্য অগ্রাহ্য করে বিচারপতি এদিন নির্দেশ দেন এই মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত কমিশন কর্মশিক্ষা বিষয়ের ৭৫০ শূন্যপদে কোনোও প্রকার নিয়োগ কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারবে না। এমনকি কোনোও প্রার্থীকে সুপারিশপত্রও দিতে পারবে না। প্রসঙ্গত, দুদিন পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিনই এবিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে হাইকোর্ট।