সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, অন্যান্য বোর্ডের পড়ুয়াদের সাথে প্রতিযোগিতার স্বার্থে ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডের পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বেশি নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশের কথা। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যকে ঘিরে আলোড়ন সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। অধিকাংশ শিক্ষক, শিক্ষিকার দাবি, এতে আদতে ক্ষতিই হচ্ছে পড়ুয়াদের।
এদিন এই প্রকল্পের উদ্বোধনের সাথে আরও বেশ কিছু শিক্ষা বিষয়ক দিকের অবতারণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্য রাখেন বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কেও। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর একটি বক্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি ক্ষমতায় আসার পর আইসিএসসি ও সিবিএসসি বোর্ডের সঙ্গে নম্বরের তুলনার স্বার্থে ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদের অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার যে নির্দেশ তিনি দিয়েছেন, তার দরুন ছাত্র ছাত্রীদের নম্বর আগের চাইতে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের বাতাবরণ ঘটে। এবং একই সাথে আলোড়ন সৃষ্টি হয় শিক্ষকমহলে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, এইভাবে প্রকাশ্য মঞ্চে নম্বর বাড়ানোর কথা বলা একজন মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে শোভা পায় না। এবং এই নম্বর বৃদ্ধির বিষয়টি যদি সত্যিই হয়, তবে এভাবে অতিরিক্ত নম্বরে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণে কার্যত লাভের বদলে ক্ষতিই হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সামনে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
একই সাথে শিক্ষক মহলের দাবি, আইসিএসসি ও সিবিএসসি বোর্ডে পঠন পাঠন প্রক্রিয়া ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডের থেকে আলাদা। ফলে তাদের পরীক্ষার প্যাটার্ন ও নম্বর প্রদানের প্রক্রিয়াও বেঙ্গল বোর্ডের সাথে মিল খায় না। ফলে এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মনোভাব এনে উপযুক্ত মূল্যায়ন ছাড়া নম্বর বৃদ্ধিতে বেঙ্গল বোর্ডের পড়ুয়াদের ভবিষ্যতে গিয়ে বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। একই সাথে সঠিক পদ্ধতিতে মূল্যায়ন না হলে তা শিক্ষকদের জন্যও ক্ষতিকারক। শিক্ষক মহলের আরও দাবি, বিগত বছরগুলিতে কোভিড পরিস্থিতি বজায় থাকায় বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সেই সময়ে পড়ুয়াদের পঠন পাঠনে যথেষ্টই ক্ষতি হয়েছে। এ বছর থেকে ফের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হতে চলেছে রাজ্যে। এখন উপযুক্ত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন না হলে তা ভবিষ্যতের উচ্চশিক্ষায় প্রভাব ফেলবে পড়ুয়াদের ওপর।