মনের জোর আর স্বপ্ন পূরণের জেদ থাকলে যে কোনো প্রতিবন্ধকতাকে পেরোতে পারে মানুষ। এ কথা ফের একবার প্রমাণ করলেন চণ্ডীগড়ের ব্লাইন্ড ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী কাফি। সম্প্রতি সিবিএসই (CBSE) বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই পরীক্ষায় ৯৫.০২ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি। এছাড়া স্কুলের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরের রেকর্ড গড়েছেন কিশোরী।
বয়স তখন মাত্র তিন বছর। হোলি খেলার দিনে অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হন ছোট্ট কাফি। পড়শির ছোঁড়া অ্যাসিডে মুখ ঝলসে যায় কাফির। এই হামলায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। দিল্লি AIMMS এ চিকিৎসা চলে তাঁর। ডাক্তার বলেন, বাকি জীবনটা দৃষ্টিহীনভাবেই কাটাতে হবে কাফিকে। প্রায় ছয় বছর হাসপাতালে কাটে, চলে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেন কাফি। কিন্তু লড়াকু কিশোরী হার মানতে নারাজ। শুরু হয় ব্রেইলে পড়াশোনা।
আরও পড়ুনঃ পুরনো আক্ষেপ মিটিয়ে বোর্ড পরীক্ষায় নজরকাড়া রেজাল্ট করলেন হাওড়ার ছেলে
চণ্ডীগড়ের ব্লাইন্ড ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন কাফি। চলে মন দিয়ে পড়াশোনা। লক্ষ্য ছিল বোর্ড পরীক্ষার ভালো রেজাল্ট। বরাবরই মেধাবী ছাত্রী কাফি। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা পঠনপাঠনে মনোনিবেশ করতেন তিনি। ভূগোল তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বিষয়। এই কঠিন লড়াইয়ে প্রতি মুহূর্তে তাঁর পাশে ছিলেন মা, বাবা। এছাড়া শিক্ষক, শিক্ষিকারাও যথেষ্ট সাহায্য করেছেন বলে দাবি করেছেন কিশোরী। ইন্টারনেটের মাধ্যমেও সাহায্য পেতেন তিনি।
অ্যাসিড হামলার ঠিক বারো বছর পর সিবিএসই বোর্ড পরীক্ষায় নজরকাড়া রেজাল্ট করে বাবা, মায়ের মুখ উজ্জ্বল করলেন কিশোরী কাফি। সবসময় পাশে থেকে অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য বাবা, মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। মেয়ের সাফল্যে অত্যন্ত খুশি তাঁর পরিবার। কাফির বাবা সরকারি দফতরে পিওনের কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘মেয়ের এই রেজাল্টে আমি গর্বিত।’ ভবিষ্যতে আইএএস(IAS) অফিসার হয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চান লড়াকু কিশোরী কাফি।