ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC)-এর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার (CSE) ফাইনাল রেজাল্ট প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি। ফলপ্রকাশে দেখা যায় আগের বছরের মতো এবছরেও নজরকাড়া সাফল্য এনেছেন মেয়েরা। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রথম চার স্থানাধিকারীরা হলেন ঈশিতা কিশোর (প্রথম), গরিমা লোহিয়া (দ্বিতীয়), উমা হারাথি এন (তৃতীয়) এবং স্মৃতি মিশ্র (চতুর্থ)।
মা তাঁর ‘ব্যাকবোন’, তৃতীয় চেষ্টায় দেশের সেরা ঈশিতা কিশোর
ইউপিএসসি (UPSC) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রথম স্থানাধিকারী ঈশিতা কিশোর। ২০১৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রী রাম কলেজ অফ কমার্স থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। অর্থনীতিতে স্নাতক ঈশিতা। জীবনের ভাঙাগড়ায় কখনো বিচলিত হননি। নিজের লক্ষ্য নির্বাচন করে পরিশ্রম করেছেন। ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম দুইবার পাশ করতে পারেননি ঈশিতা। ফেল করেন প্রিলিমসেও। এ বছরেই প্রথম ইন্টারভিউ রাউন্ডের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। আর তাতেই বাজিমাত। ঈশিতা বলেন, মা তাঁর ব্যাকবোন। সবসময় সঙ্গে থেকে সাহস জুগিয়েছেন তাঁর মা। ঈশিতার সাফল্যের চাবিকাঠি কী? ইউপিএসসি টপারের উত্তর, “মেহেনতই সাফল্যের চাবিকাঠি”।
আরও পড়ুনঃ ফুটপাতে জুতোর দোকান সামলে মাধ্যমিকে সফল জলপাইগুড়ির অভিজিৎ দাস
দিনে ১৫ ঘন্টা পড়া! কোচিং ছাড়াই ইউপিএসসি দ্বিতীয় বিহারের ‘গরিমা’
ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী গরিমা লোহিয়া। বক্সারের ছোট্ট জনপদে গরিমার বাড়ি। লকডাউনের সময় তিনি ঠিক করেন ইউপিএসসির প্রস্তুতি নেবেন। তারপরই শুরু হয় কঠিন পরিশ্রম। দিনে পনেরো ঘন্টা করে পড়তেন গরিমা। কোচিং নয় বরং অনলাইনে চলত পড়াশোনা। সঙ্গে পড়তেন প্রচুর বই। এই পরিশ্রমের দিনগুলিতে মা সঙ্গে ছিলেন তাঁর। প্রথমবার ইউপিএসসি প্রিলিমসে উত্তীর্ণ হতে পারেননি গরিমা। এরপর ফের প্রস্তুতি শুরু করেন। আর দ্বিতীয় চেষ্টাতেই দ্বিতীয় স্থানাধিকারী গরিমা এখন গোটা বিহারের গর্ব।
প্রথম চারে ব্যর্থ, পঞ্চম চেষ্টায় ইউপিএসসি ‘তৃতীয়’ IIT প্রাক্তনী উমা
ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন হায়দরাবাদ আইআইটির প্রাক্তনী ছাত্রী উমা হারাথি এন। একবার নয় টানা পাঁচ বারের চেষ্টায় সাফল্য পেয়েছেন তিনি। এর আগে চারবার ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু পঞ্চম বারের চেষ্টায় বাজিমাত করলেন মেয়ে। উমা বলেন, ‘এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া’। এই পাঁচ বছরে তিনি যেমন ভুল থেকে শিখেছেন তেমনই নিজের দুর্বলতা ও ক্ষমতা উপলব্ধি করেছেন। তাঁর কথায় ‘ফেল করা ভাল, এতে কোনো ভুল নেই’। পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু পড়তে হবে। অধ্যাবসায়কেই সাফল্যের সূত্র মনে করেন উমা।
আরও পড়ুনঃ অভাব ডিঙিয়ে মেধাতালিকায় উজ্জ্বল সবজি বিক্রেতার ছেলে
ইউপিএসসি চতুর্থ স্থানাধিকারী স্মৃতি এখন পরিবারের গর্ব
দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে ঠিক করে নিয়েছিলেন আইএএস (IAS) অফিসার হবেন। সেই স্বপ্ন এবার পূরণ হল তাঁর। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন স্মৃতি মিশ্র। তৃতীয় বারের চেষ্টায় এই সাফল্য এনেছেন তিনি। দিনে সাত-আট ঘন্টা পড়তেন, তৈরি করতেন নোট। লক্ষ্য ছিল সাফল্য অর্জন। তাই হারের পরেও ঘুরে দাঁড়ান তিনি। আইনের ছাত্রী স্মৃতি। মেয়ের সাফল্যে অত্যন্ত খুশি তাঁর বাবা। পরিবার ও শহরের গর্ব স্মৃতিকে নিয়ে।