এক নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে স্বপ্নের জগতে পাড়ি। সমস্ত চ্যালেঞ্জকে জয় করে আজ আইএএস (IAS) অফিসার রাজস্থানের কন্যা দীপেশ কুমারী। ছোট বেলায় তাঁকে বলা হয়েছিল বড় স্বপ্ন দেখোনা, পূরণ করতে পারবে না। তখন সে কথায় প্রেক্ষিতে কোনোও উত্তর দেননি দীপেশ। কিন্তু পকোড়া বিক্রেতার মেয়ে দীপেশের মনে চেপে বসেছিল জেদ। স্বপ্ন কোনোও সাধ্য মানেনা। তাই তখন থেকেই তিনি ঠিক করেছিলেন এই কথার যোগ্য জবাব তিনি কাজে দেবেন। তারপর একটা দীর্ঘ পথ, একাগ্রতা ও কঠিন পরিশ্রম। অবশেষে এল মাহেন্দ্রক্ষণ। ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইএএস (IAS) অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হলেন দীপেশ কুমারি। কেমন ছিল তাঁর চলার পথটা? কতটা কঠিন ছিল সেই চ্যালেঞ্জ? আসুন আজকের এই প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক।
রাজস্থানের ভরতপুরের অটল বাঁধ এলাকার কাঁকরওয়ালি কুইয়ার বাসিন্দা দীপেশ কুমারি। তাঁর বাবা গোবিন্দ ছিলেন পকোড়া বিক্রেতা। পকোড়া ও ভাজাভুজি বিক্রি করেই সংসার চালাতেন তিনি। এতটুকু ছোট্ট ঘরে বাস ছিল পরিবারের সাত সদস্যের। তার মধ্যে ছিল অভাব, অনটন ও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই। এই ছোট্ট ঘরেই আলোর দিশা খোঁজেন দীপেশ। বাবা গোবিন্দ তাঁর সন্তানদের পড়াশোনায় কোনোও অভাব আসতে দেননি। সন্তানদের শিক্ষার জন্য যা, যা প্রয়োজন সবই করে গিয়েছেন তিনি। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন দীপেশ। স্থানীয় শিশু বিদ্যা মন্দির থেকে তিনি দশম শ্রেণীর পঠনপাঠন কমপ্লিট করেন। বোর্ডের পরীক্ষায় দীপেশ পেয়েছিলেন মোট ৯৮ শতাংশ নম্বর। দ্বাদশের পরীক্ষায় তাঁর নম্বর ছিল ৮৯ শতাংশ। এরপর তিনি ভর্তি হন যোধপুর কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে।
আরও পড়ুনঃ ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে IAS অফিসার হলেন আরুষি শর্মা
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ শেষে তিনি চান্স পান আইআইটিতে। মুম্বাই আইআইটিতে পড়াশোনা করে তিনি অর্জন করেন এমটেক ডিগ্রি। সে সময় তাঁর যে স্কোর ছিল তাতে যেকোনো মোটা বেতনের চাকরিতেই যুক্ত হতে পারতেন তিনি। কিন্তু না। মেয়ের মাথায় ঝোঁক চেপেছিল তিনি আইএএস (IAS) অফিসার হবেন। আর সে কারণেই তিনি শুরু করেন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি। প্রথমবার পরীক্ষায় বসে উত্তীর্ণ হতে পারেন না তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় চেষ্টাতেই লক্ষ্যভেদ করলেন মেধাবী কন্যা। ২০২১ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৯৩ তম স্থান দখল করে আইএএস (IAS) অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। তাঁর জীবনযুদ্ধের গল্প আজ সকল ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা। ছোটবেলায় দেখা স্বপ্নকে পূরণ করে তিনি প্রমাণ করেছেন, স্বপ্ন দেখার জন্য সাধ্য বিচার লাগে না। পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে যে কোনো স্বপ্নপূরণ সম্ভব।