ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC)-এর পরীক্ষা দেশের সবচেয়ে কঠিন যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়। এমনকি সারা বিশ্বের কঠিন পরীক্ষাগুলির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এই এক্সাম। পরিশ্রম আর একাগ্রতাই ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার একমাত্র সূত্র। বারবার অকৃতকার্য হলেও যাঁরা জেদ ধরে রাখেন, তাঁরাই আসলে জিততে পারেন জীবনে। এখনও বহু ছাত্রছাত্রী মনে করেন, জীবনের ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো কার্যত অসম্ভব। আর সেই ভাবনা যে ভুল, তা ফের একবার প্রমাণ করেছেন আইএএস (IAS) অফিসার রুকমণি রিয়া। আজকের এই প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক তাঁর সফলতার কাহিনী।
চন্ডিগড়ের বাসিন্দা রুকমণি রিয়ার ছোট থেকে মেধাবি ছাত্রী ছিলেন না। গুরুদাসপুরের একটি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন তিনি। চতুর্থ শ্রেণীতে তিনি ভর্তি হন ডালহৌসির স্যাক্রেড হার্ট স্কুলে। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় ফেল করেছিলেন রুকমণি। সেই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। কিন্তু এই ঘটনাই রুকমণির জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি মনে মনে ঠিক করেন, একদিন জীবনে সফল হয়ে দেখাবেন ঠিক। ওমনি যেমন ভাবা তেমন কাজ। পরের শ্রেণী থেকেই তিনি শুরু করলেন পরিশ্রম। সফলভাবে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাশ করেন রুকমণি। এরপর গুরু নানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে মুম্বইয়ের টাটা ইন্সটিটিউট থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর অর্জন করে NGO তে ইন্টার্নশিপ শুরু করেন রুকমণি। তখনই তাঁর মাথায় ঝোঁক চাপে তিনি ইউপিএসসির সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
আরও পড়ুনঃ IAS অফিসার হয়ে চমকে দিলেন পকোড়া বিক্রেতার মেয়ে
ইন্টার্নশিপ শেষ করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন রুকমণি। কোনোও কোচিং ছাড়াই নিজে পড়াশোনা করবেন বলে মনস্থির করেন। পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য তিনি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর NCERT বই খুঁটিয়ে পড়তে শুরু করেন। নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন মক টেস্টে। এর পাশাপাশি চলত বিগত বছরের প্রশ্ন ঘাঁটা ও তার সমাধান। লিখিত পরীক্ষার মতো ইন্টারভিউর প্রস্তুতি নিতেন রুকমণি। তার জন্য বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্র পড়তেন। আশেপাশে ঘটতে থাকা সমস্ত খবর নখদর্পণে থাকতো তাঁর। প্রস্তুতি সম্পন্ন করে পরীক্ষায় বসেন রুকমণি। ২০১১ সালের ইউপিএসসিতে AIR2 পাশ করেন ও আইএএস (IAS) অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন। আজ অফিসার রুকমণি রিয়ার সকল ছাত্র ছাত্রীর অনুপ্রেরণা।