ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC)-এর পরীক্ষায় পাশ করতে দিনের পর দিন ঘন্টার পর ঘন্টা পরিশ্রম করতে হয় যুবক-যুবতীদের। কিন্তু সঠিক পন্থা জানা থাকলে অল্প সময় পড়েও ভালো ফল করতে পারেন। দেশের কঠিনতম পরীক্ষা হল UPSC। লক্ষ লক্ষ প্রার্থীদের টপকে এই পরীক্ষায় লক্ষ্যভেদ করা সহজ নয়। তবে এই কঠিন কাজ কেই সহজ করে সফল হয়েছেন বঙ্গতনয়া স্মিতা সবরওয়াল। দার্জিলিংয়ের কন্যা স্মিতা মাত্র ২২ বছর বয়সে UPSC-এর গন্ডি পার করেছেন। তাও প্রথমবারের প্রয়াসেই! কিভাবে করলেন তিনি এই অসাধ্য সাধন? আজকের প্রতিবেদনে সেই কাহিনী তুলে ধরবো আপনাদের সামনে।
দার্জিলিংয়ে জন্মগ্রহণ করা বঙ্গতনয়া স্মিতা স্কুলিং কমপ্লিট করেন সেকেন্দ্রাবাদের সেন্ট অ্যান্স স্কুল থেকে। ICSE বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় তিনি প্রচুর নম্বর নিয়ে পাশ করেন। ছোটো থেকেই লেখা পড়ায় মেধাবি ছিলেন স্মিতা। দ্বাদশ পাশের পর স্নাতক স্তরে তিনি ভর্তি হন সেন্ট ফ্রান্সিস ডিগ্রি কলেজ ফর ওম্যানে। বানিজ্য বিভাগে পড়াশোনা করতেন স্মিতা। পড়াশোনা শেষ করে তিনি ঠিক করেন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন। আর সেই সময় থেকেই শুরু হয় তাঁর পরীক্ষা প্রস্তুতি। দিনে ঘন্টার পর ঘন্টা বই নিয়ে বসে থাকতেন না স্মিতা। নির্দিষ্ট রুটিন মেনে পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন তিনি। ২০২০ সালে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন স্মিতা সবরওয়াল। আর সেবারেই প্রথম চান্সে চতুর্থ স্থান অর্জন করে পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। চোখ ধাঁধানো রেজাল্ট করে IAS পদে চাকরি পান বঙ্গতনয়া। মাত্র বাইশ বছর বয়সী স্মিতা বর্তমানে দেশের কনিষ্ঠতম আইএএস (IAS) অফিসার।
দৈনিক চাকরির খবরের আপডেট সবার প্রথম পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন 👇
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের প্রথম ‘বাহুহীন’ তীরন্দাজ অর্জুন পুরস্কার বিজয়ী শীতল দেবী
IAS স্মিতার সাফল্যের সিক্রেট
UPSC পরীক্ষায় পাশ করার জন্য পরীক্ষার আগের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত, তা জানিয়েছেন IAS স্মিতা। অনেক পরীক্ষার্থীদেরই দেখা যায়, দিনে একটানা বারো থেকে ষোলো ঘন্টা পড়াশোনা করার অভ্যাস রাখেন। যদিও স্মিতা তেমনটা করেননি। একটি নির্দিষ্ট রুটিন বানিয়ে সেই অনুযায়ী প্রতিদিন পড়তে বসতেন স্মিতা। তিনি জানান, দিনে মাত্র ছয় ঘন্টা পড়তেন তিনি। তবে খেয়াল রাখতেন কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও দেশের বিভিন্ন খবরাখবরের দিকে। নিয়মিত কাগজ পড়ার অভ্যাস ছিল তাঁর। তিনি মানেন, ঠিকঠাক প্ল্যান মাফিক পড়লে UPSC জয় করা সম্ভব। পরীক্ষায় স্মিতার বৈকল্পিক বিষয় ছিল নৃতত্ত্ব ও পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। পরীক্ষার ফল নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করতেন না স্মিতা। তাঁর ভরসা ছিল নিজ প্রস্তুতিতে। আর বিশ্বাস ছিল নিজ উপর। তার ফলস্বরূপ আজ তিনি দেশের উচ্চপদস্থ অফিসার পদে নিযুক্ত রয়েছেন। বর্তমান পরীক্ষার্থীদের জন্য IAS স্মিতার টিপস, নিজের লক্ষ্য থেকে কখনও নজর সরাবেন না। পরিশ্রম করুন, সফলতা আসবেই।
কর্মক্ষেত্রে যথেষ্ট পারদর্শিতার পরিচয় রেখেছেন স্মিতা সবরওয়াল। প্রথমে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। পরে গ্রামীন জল সরবারহ বিভাগ, মিশন ভাগীরথীর সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর পদেও কাজ করেছেন বেশ কিছুদিন। নিজের কর্মজীবনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পেয়েছেন স্মিতা। বর্তমানে তিনি হয়ে উঠেছেন সকলের অনুপ্রেরণা।