সরকারি কর্মচারীদের কাছে DA বা মহার্ঘভাতা বেতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রে এই মহার্ঘভতার পরিমাণ যথেষ্ট কম হওয়ার কারণে বহু বছর ধরেই অভিযোগ জানাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে পেনশনভোগী অবসরপ্রাপ্ত মানুষেরা হলেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্যান্য রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের তুলনায় অত্যন্ত কম হারে মহার্ঘ ভাতার বিরোধিতা করেছেন। তবে আগামী অর্থবর্ষ থেকেই নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা পেতে চলেছেন রাজ্যের কর্মচারীরা।
চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখে রাজ্যভাজের অধিবেশনে অর্ধ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের কর্মচারী এবং পেনশন ভোগী মানুষদের জন্য আরও ৪ শতাংশ DA বৃদ্ধির ঘোষণা করেন। যেখানে নতুন অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২৫-২৬ থেকেই রাজ্যের কর্মচারীরা ১৮ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পেতে চলেছেন। নতুন বছর শুরু হচ্ছে এপ্রিল মাসের ১ তারিখে, ঐদিন থেকেই রাজ্য সরকারের সকল কর্মচারীদের কাছে মূল বেতনের ১৮ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের কর্মীদের পাশাপাশি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয় এর শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, সরকার অধিকৃত পঞ্চায়েত, পুরসভার কর্মীদেরও সম মানে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের কর্মচারীদের বামপন্থী সংগঠনগুলি যথেষ্ট পরিমাণে অসন্তোষ জানিয়েছে। ন্যায্য ডিএ-র দাবিতে আগামী ৭ থেকে ৯ এপ্রিল রাজ্য জুড়ে সরকারি দফতরে ৩ ঘণ্টা ব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মহার্ঘভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হলেও এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের মহার্ঘভতার ফারাক ৩৫ শতাংশ। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল কর্মচারী সংগঠন সরকারের এই ঘোষণাকে যথেষ্ট ফলদায়ক বলে মনে করছে।
আরও পড়ুনঃ 8th Pay Commission: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের কাদের কত টাকা বাড়বে? দেখে নিন এক্ষুনি
বামপন্থী কোঅর্ডিনেশন কমিটির বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী জানান, “৩৯ শতাংশ ডিএ বাকি ছিল। দেওয়া হয়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। এখনও বিস্তর ডিএ বকেয়া রয়েছে।” এমনকি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কর্মচারীরা অন্যান্য রাজ্য সরকারের মহার্ঘভতার তুলনায়ক যথেষ্ট পরিমাণে কম মহার্ঘ ভাতা পেয়ে থাকেন বলেও দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি হওয়ার পরিবর্তে আবারো পিছিয়ে গেল শুনানির তারিখ। কলকাতা উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে রাজ্যের কর্মচারীদের স্বপক্ষে ডিএ মামলার রায় দেওয়া হলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি শীর্ষ আদালতের কাছে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা শুরু করা হয়। তখন থেকেই বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে ডিএ মামলা ছিল। মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পূর্বেই বিচারপতি অবসর নেওয়ার কারণে পুনরায় এই মামলার শুনানি ওঠে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই মামলা নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পর প্রায় তিন বছর কেটে গেলেও এই মামলার কোন সঠিক দিশা দেওয়া হয়নি। বিগত তিন মাস ধরে এই মামলার কোনরকম শুনানি না হওয়ার পরেও গত মঙ্গলবার মামলার শুনানি বাতিল করা হয়। এই মামলার শুনানি আগামী এপ্রিল মাসে হবে বলে জানানো হয়েছে।