বিকল্প কর্মসংস্থান

বিকল্প কর্মসংস্থানঃ ড্রাগন ফলের চাষ করুন, বার্ষিক আয় হবে ১০ লক্ষ টাকা

Advertisement

উচ্চ শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও চাকরির দেখা নেই। হতাশ হয়ে পড়ছেন। রাজ্যের সমস্ত বেকার যুবক- যুবতীদের জন্য ExamBangla.com -এর ‘বিকল্প কর্মসংস্থানের’ নতুন প্রতিবেদন। কেবল চাকরি জীবনের পেশা হবে এমন কোনো কথা নেই। চাকরি ছাড়াও অন্যান্য লাভজনক পেশা রয়েছে, যা নিয়ে আজকের প্রতিবেদনে আলোচনা করবো। বর্তমান সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটি লাভজনক ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশও এর থেকে পিছিয়ে নেই। আজকের এই প্রতিবেদনে যে ব্যবসার কথা বলতে যাচ্ছি তা হলো ড্রাগন ফলের চাষ। ড্রাগন কথাটা শুনে অনেকেরই হয়তো নতুন লেগে থাকবে, কিন্তু তার সম্পর্কে সমস্ত রকম জানার জন্য নিচের রইল বিস্তারিত আলোচনা।

ড্রাগন ফলের চাষ করে অনেকেই লাভবান হয়েছেন এবং খুব কম খরচেই এই ব্যবসাটি শুরু করা যায়। যেহেতু এটা এক ধরনের চাষ তাই আমরা বাড়ির প্রায় কমবেশি সকলেই একটু হাতে হাত লাগিয়েই ব্যবসায় আরও উন্নতি করতে পারব। বাড়ির সংলগ্ন কোনো পতিত জমি থাকলে সেটিকে চাষযোগ্য জমি করে নিয়ে সেখানেও আমরা এই চাষ করতে পারি।

ড্রাগন ফল

ড্রাগন ফল কি- এই ফলটি এক ধরনের ক্যাকটাস প্রজাতির ফল। মূলত এই ফলটি আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল কিন্তু বর্তমান আমাদের দেশেও এই ফলটি চাষ করে অনেকেই লাভবান হয়েছেন। গাছটি ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নরম শাঁস মিষ্টি গন্ধ যুক্ত গোলাপি রঙের এই ফলটি খেতে অনেক সুস্বাদু। ড্রাগন ফলের আরেকটি নাম হল পিটায়া ফ্রুট। ড্রাগন ফলের প্রজাতি- ড্রাগন ফল ৩ টি প্রজাতির হয়, যথা- সাদা, লাল ও হলুদ।

বিকল্প কর্মসংস্থান: ক্লিক করুন

ড্রাগন ফলের উপকারিতা- ফলটি হাঁপানি, সর্দি, কাশি, ক্যান্সার, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগে যথেষ্ট উপকারী। এছাড়াও ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং চুলের জন্য ড্রাগন ফলের উপকারিতা রয়েছে।
ড্রাগন ফলের ঔষুধি গুন থাকায় অন্যান্য ফলের চেয়ে এই ফলের চাহিদা খুব বেশি এবং দামও আকাশ ছোঁয়া। তাই ড্রাগন ফল চাষ করে ক্ষতির ভয় নেই।

চাষের জন্য উপযুক্ত জমি- বেলে মাটিতে এই চাষ সবথেকে ভালো হয় তবে খুব অম্ল ক্ষার মাটি ছাড়া সব জমিতে চাষ করা যেতে পারে। চাষযোগ্য জমিতে যেন কোনোভাবেই জল না দাঁড়ায়, উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় ও রাঢ় অঞ্চলে -এর চাষ ভালো হয়। চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হল এপ্রিল থেকে অক্টোবর। ১.৫ মিটার x ১.৫ প্রশস্ত x ১ মিটার আকারে গর্ত করে কয়েকদিন চারদিক খোলা রাখুন যেন গর্তটি ভালো করে শুকিয়ে যায়। এর ২০ থেকে ২৫ দিন পরে গোবর এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সার দিয়ে গর্তেটিকে চারা লাগানোর উপযুক্ত করে তুলুন। অঙ্গজ পদ্ধতিতে এই ফলের বংশবিস্তার হয়ে থাকলেও কাটিং পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করতে পারলে খুব তাড়াতাড়ি ফল ধরতে শুরু করে এবং গাছটির মাতৃ গুনাগুনও ভালো বজায় থাকে। গাছ লাগানোর ১৪- ১৫ মাস পর থেকে ফল ধরতে শুরু করে। বছরে প্রায় ছয় থেকে সাত মাস ধরে এই গাছটিতে ফল পাওয়া যায় এমনকি প্রায় ৩০ বছর ধরে গাছটি ফল দেয়। এই চাষ করতে গিয়ে খুব একটা খরচ নেই বললেই চলে কিন্তু এক বছর পর থেকে বছরে কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকার বেশি আয় করা সম্ভব। এই ফলের চারা কোথায় পাওয়া যায় তা নিয়ে অনেকেরই অনেক রকমের মত। চারা কেনার থেকে সবচেয়ে ভালো হয় কালম কাটিং করে নতুন গাছ জন্মানো। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বড় বড় নার্সারিতে এই ফলের চারা পাওয়া যায়।
তবে আপনি যদি এই চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ব্লক কিংবা জেলা কৃষি অধিকর্তার পরামর্শ নিতে পারেন।

ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বহু আগ্রহী কৃষক এই চাষ শুরু করেছেন। এবং লাভের মুখ দেখছেন। নিজের বেকারত্বের জ্বালা মেটাতে আজকেই শুরু করতে পারেন এই চাষ। ExamBangla.com -এর মূল উদ্যেশ্য চাকরির বিকল্প কাজের খবর দেওয়া। যেকোনো নতুন চাষ কিংবা ব্যবসা শুরু করার আগে ওই ব্যবসা সম্পর্কে নিজে অবগত হন। তারপরে শুরু করবেন। প্রতিটি ব্যবসায় লাভ ও ক্ষতি আছে। আপনার দক্ষতা আপনাকে সাফল্য এনে দিতে পারে।

Related Articles