ভারতীয় সেনার অগ্নিপথ মডেল অনুসরণ করে ব্যাঙ্কগুলোতেও কর্মী নিয়োগ শুরু করেছে কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। এই তালিকায় ভারতের সর্ববৃহৎ ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা সহ আরও বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রয়েছে। ব্যাঙ্কগুলোতে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ হচ্ছে মূলত অফিসার গ্রেড এর কিছু পদে। তার মধ্যে সাধারন ক্লার্কদের পাশাপাশি উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অনেকেও পড়ছেন। এই পদগুলোতে পূর্বে স্থায়ীভাবে নিয়োগ হতো। কিন্তু এবার থেকে অস্থায়ী ভাবে চুক্তির ভিত্তিতে এই পদগুলোতে নিয়োগ হচ্ছে।
যেমন অগ্নিপথ স্কিমে সেনা নিয়োগের সময় বিভিন্ন মহলে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল, তেমনি ব্যাঙ্ক কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও স্বল্পমেয়াদী ঠিকাভিত্তিক নীতি নিয়ে সরব বিভিন্ন সংগঠন। তাদের মূলত বক্তব্য, মোদী সরকার অগ্নিপথ মডেল অনুসরণ করে ব্যাঙ্ক শিল্পেও চুপিসারে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নেওয়ার পথ খুলে দিল। কম টাকায় কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। যাঁদের অস্থায়ী ভাবে চাকরি দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা নানা ভাবে বঞ্চিত হবেন। দেশের প্রতিটি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রগুলোতে এই প্রথা শুরু হলে বহু মেধাবী ছেলেমেয়ের কেরিয়ার অকালে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চুক্তি শেষ হওয়ার পরে কেউ কাজ না পেলে আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও পড়ার আশঙ্কা থাকছে। তাছাড়া দুই থেকে দশ বছরের চুক্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে বর্তমানে। এক্ষেত্রে কোনো কর্মচারীর ৪০/৪৫ বছর বয়সে চুক্তি শেষ হলে সেক্ষেত্রে তার পক্ষে পুনরায় অন্য চাকরি পাওয়া যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
চাকরির খবরঃ রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে ৮ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ
বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্মী ইউনিয়নগুলো এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একজন কর্মীর কথায়, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে বলেছেন যে, ব্যাঙ্ক শিল্পে কর্মী এবং অফিসার মিলে ৪১ হাজারেরও বেশি পদ খালি আছে। কিন্তু ওই সব পদে নিয়োগের কোনও পরিকল্পনা তাঁরা তৈরি করেননি। যার ফলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এর পেছনে সরকারের মদত আছে। রাজকোষের খরচ বাঁচানোর চেষ্টা চলছে সর্বত্র।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস এর পিছনে রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছেন। কেননা সাধারণত একজন স্থায়ী কর্মী ৩৫ বছর ধরে চাকরি করেন। কিন্তু গড়ে ৫ বছরের চুক্তিতে কর্মী নিয়োগ হলে ৩৫ বছরে ৭ জন এই একটা পদে নিযুক্ত হচ্ছেন। এতে সরকার নির্বাচনের সময় সহজেই তথ্য দেখাতে পারবে যে তারা কর্মসংস্থান বাড়িয়েছে। প্রতি বছর কতজন চাকরি পাচ্ছেন।
#সংগৃহিত