পরিবারে আর্থিক অনটন থাকলেও হার মানেননি আলিপুরদুয়ারের বাপ্পা সাহা। ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC) পরিচালিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেন তিনি। তাঁর সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে পরিজনেরা। হবু আইএএস অফিসার বাপ্পার কথায়, আগামী দিনে দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াবেন তিনি।
বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাই ছোট থেকেই পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েন ছিলই। কিন্তু এসবের মাঝেও কখনও থেমে থাকেননি বাপ্পা। অধ্যাবসায় ও জেদ ছিল তাঁর সঙ্গী। আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন প্রত্যন্ত এলাকা দক্ষিণ মাঝেরডাবরির বাসিন্দা বাপ্পা সাহা। তাঁর শিক্ষাগ্রহণ শুরু গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর তিনি ভর্তি হন আলিপুরদুয়ারের গোবিন্দ হাইস্কুলে। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন তিনি।
চাকরির খবরঃ রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে কর্মী নিয়োগ
এরপর তিনি ভর্তি হন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিদ্যালয়ে বিএসসি এগ্রিকালচারাল নিয়ে। এরপর নয়া দিল্লির ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল ইন্সটিটিউটে এমএসসি এগ্রিকালচার স্ট্যাটিস্টিক্যাল নিয়ে ভর্তি হন তিনি। এর সাথেই তাঁর প্রস্তুতি চলে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষার। এরপর জুন মাসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন বাপ্পা। গত ১৯ ডিসেম্বর ইউপিএসসি ভবনে ইন্টারভিউ হয়েছিল তাঁর। প্রথমবার অংশগ্রহণ করেই সর্বভারতীয় এই পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন বাপ্পা সাহা।
চাকরির খবরঃ আর্মি পাবলিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ
তাঁর বাবা গোপাল সাহার কথায়, আর্থিক সমস্যার কারণে ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। এক সময় জীর্ণ ঘরে বিদ্যুৎ ছিলনা তাঁদের।তবে এসবের মাঝেও কোনও খামতি রাখেননি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায়। ছেলে বাপ্পা যেমন অভাবনীয় সাফল্যের অধিকারী, তেমনই মেয়ে বর্ণালী সাহা বিএড কোর্সের ছাত্রী। ছেলে মেয়েদের কথা বলতে গিয়ে চোখে আনন্দাশ্রু আসে তাঁর মা বাবার। অন্যদিকে বাপ্পার কথায়,পরিবার ও শিক্ষক মহলের সহযোগিতায় এহেন রেজাল্ট করতে পেরেছেন তিনি। প্রতি মুহূর্তে যেভাবে তাঁর পরিবার সঙ্গে ছিল তাতে মানসিক জোরের সাথে জেদের সঞ্চয় হয়েছিল তাঁর। সাথে ছিল অধ্যাবসায়। এসবের সাথেই চোখ ধাঁধানো রেজাল্ট আলিপুরদুয়ারের বাপ্পা সাহার। তাঁর শিক্ষক নিলয় দেবনাথের কথায়, বাপ্পা আলিপুরদুয়ার তথা এ রাজ্যের গর্ব।