শিক্ষার খবর

‘অনাহারের গ্রাম’ থেকে যাদবপুরে পিএইচডি! প্রতিকূলতাকে হারিয়ে স্বপ্নপূরণের পথে বাংলার ছেলে!

Advertisement

একদা ‘অনাহারের গ্রাম’ নামে খবরের শিরোনামে ছিল যে আমলাশোল সেই গ্রামের যুবক গোপাল মুড়া এখন যাদবপুরের পিএইচডি ছাত্র। তাঁকে নিয়ে অহংকারে বুক বেঁধেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের কথায়, “আমাদের গোপাল অনাহারের অতীত ভুলিয়ে দিয়েছে, ওঁকে নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের পাহাড়ে ঘেরা আমলাশোল গ্রামে বড়ো হয়ে উঠেছেন গোপাল মুড়া। ২০০৭ সালে ভুলাভেদা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। সে সময় অধিকাংশ দিন আধপেটা হয়েই স্কুল যেতে হতো তাঁকে। এরপর শিলদা হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২০০৯ সালে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে পাশকুড়া কলেজের এডুকেশন বিভাগে স্নাতকের পড়াশোনা শুরু করেন। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরে উত্তীর্ণ হয়ে সেখানে গবেষণার সুযোগ পান গোপাল মুড়া।

আরও পড়ুনঃ রাজ্যে শুরু হচ্ছে চার বছরের স্নাতক কোর্স

তাঁর বাবা সন্তুষ মুড়া চাষের কাজের সাথে আর মা সোমবারি মুড়া বিভিন্ন বাড়িতে কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। পারিবারিক অভাব, অনটনের সাথে ছিল তৎকালীন পরিস্থিতির প্রভাব। গোপালের মায়ের কথায়, “আমরা অনাহারে থেকেছি, ছেলেটা আধপেটা হয়ে স্কুলে যেত। আজ ওর জেদের কাছে সব প্রতিকূলতা হার মেনেছে।” গোপাল মুড়ার কথায়, সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁর বাবা, মা সবসময় তাঁর পাশে ছিলেন। তবে যথেষ্ট লড়াই করেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। এক সময় ছিল যখন একমুঠো ভাত জোগাড় করতে হিমশিম খেয়ে যেতে হতো।

প্রসঙ্গত, মাওবাদী আন্দোলনের সময় ঝাড়গ্রামের আর্থিক কাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। ২০০৪ সালে আমলাশোল গ্রামের অনাহারে মৃত্যুর খবর আলোড়ন তোলে রাজ্যে। তবে বর্তমানে সেখানকার সমস্যা অনেকটাই দূর হয়েছে। রেশন ব্যবস্থা ভালো হাওয়ায় অনাহার মুছে গিয়েছে। এখন সেই গ্রাম থেকে বেশ ভালো পড়াশোনা করছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের সকলের কাছে গোপাল মুড়া একজন অনুপ্রেরণা। এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের।

যাদবপুর

Related Articles