মনের জোর আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। আর যদি সেখানে আসে স্বপ্নপূরণের কথা, তবে যে কোনোও চ্যালেঞ্জকেই বরণ করে নেওয়া যায় হাসিমুখে। সম্প্রতি তেমনই এক নজির গড়ে শিরোনামে এলেন বঙ্গ সন্তান শঙ্খজিত দাস। এবছরের ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা (NEET UG) তে ৯৯.৬৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা শঙ্খজিত দাস। তাঁদের এলাকায় কোনো ভালো ডাক্তার না থাকায় ছোট থেকেই দেখে এসেছেন চিকিৎসার অভাবে কিভাবে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন মানুষজন। ছোটবেলায় এহেন কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন হওয়া শঙ্খজিত চেয়ে এসেছেন সমস্যার প্রতিকার করতে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে একজন ডাক্তার হবেন। সঠিক চিকিৎসায় প্রাণ বাঁচাবেন মানুষের। শঙ্খজিত মেধাবী ছাত্র। উচ্চমাধ্যমিকে ৯৪ শতাংশ নম্বর পান তিনি। উচ্চমাধ্যমিকের পর তিনি স্থির করেন, নিট ইউজি পরীক্ষায় বসবেন। সেইমতো চলে কঠিন পরিশ্রম।
আরও পড়ুনঃ উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম ও নিট পরীক্ষায় দ্বাদশ কলকাতার সায়ন
শঙ্খজিত জানান, কোচিং ছাড়া সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। খুঁটিয়ে পড়েন প্রত্যেকটি অধ্যায়। পদার্থবিদ্যা, বায়োলজি ও রসায়নের প্রতি বিশেষ আগ্রহ রয়েছে তাঁর। পড়াশোনার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় বাঁধেননি তিনি। কোনোও কোনোও দিন পড়তেন দুই ঘন্টা তো কখনও পড়তেন দশ ঘন্টা করে। তবে যতটুকু সময় পড়তেন মন দিয়ে পড়তেন। একটানা পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের নিদর্শন তাঁর রেজাল্ট। প্রথমবার নিট ইউজি পরীক্ষায় বসেই ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৬৪৯ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন তিনি।
চাকরির খবরঃ বর্তমানে কি কি চাকরির ফর্ম ফিলাপ চলছে
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শঙ্খজিত। বাবা বিদ্যুত দাস পেশায় সবজি বিক্রেতা। নিট ইউজি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে টিউশন খরচ জোগানো একপ্রকার অসম্ভব তাঁর জন্য। পরিবারকে বুঝতেন শঙ্খজিত। ভরসা ছিল নিজের উপরেও। তাই কোচিং ছাড়াই নিজে পড়াশোনা করে পরীক্ষায় বসেন তিনি। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার এখন খুশির আবহ তাঁর পরিবারে। তাঁর ডাক্তার হওয়ার জার্নি শুরু হল। আগামীদিনে নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য যে কোনো চ্যালেঞ্জ লড়তে প্রস্তুত আলিপুরদুয়ারের শঙ্খজিত।