ছোটো থেকেই লড়াই করেছেন দারিদ্র্যতার সঙ্গে। পারিবারিক অবস্থার কারণে পড়াশোনা চালানো ছিল কঠিন। বাড়িতে রাতে বিদ্যুৎ থাকতো না, মোমবাতির আলোয় পড়াশোনা করতেন তিনি। এহেন পরিস্থিতি থেকেই নেট (NET) জুনিয়ার রিসার্চ ফেলোশিপের পরীক্ষায় দুর্দান্ত রেজাল্ট করলেন বাংলার ছেলে জয়বাহাদুর রাই। তাঁর সাফল্যের খুশি ছড়িয়ে পড়েছে পরিবার থেকে গ্রামে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার খবরে গ্রামের বাসিন্দারা এসেছেন খুশি বিনিময়ে।
আলিপুরদুয়ার জেলার দলসিংপাড়া রায়বাহাদুর বস্তির বাসিন্দা জয়বাহাদুর রাই। ছোটবেলা থেকেই মেধাবি জয়বাহাদুর। পরিবারের দারিদ্র্যতার মাঝে হাসিমুখে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। কারণ পড়াশোনার প্রতি তাঁর ছিল অমোঘ টান। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশের পর রিসার্চ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনি। ইচ্ছে ছিল কলেজের অধ্যাপনার পাশাপাশি রিসার্চ চালিয়ে যাবেন। বিগত বছরগুলিতে বিভিন্ন সরকারি চাকরির প্রস্তুতিও নেন তিনি। বসেন বেশ কিছু সরকারি চাকরির পরীক্ষায়। এবছর নেট জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের পরীক্ষায় বসেন তিনি। আর এবারেই এল কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। সফলতার সঙ্গে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন জয়বাহাদুর।
আরও পড়ুনঃ স্কুলগুলিকে বিশেষ নির্দেশ পাঠালো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ
জয়বাহাদুরের বাবা চন্দ্র বাহাদুর রাই ছিলেন চা বাগানের শ্রমিক। বাড়িতে আছেন এক ভাই। জয়বাহাদুরের বাবা যখন অবসর নেন তখন আরও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় গোটা পরিবার। তবে পরিস্থিতি বেসামাল হলেও হাল ছাড়েননি জয়বাহাদুর। বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি করে সংসার চালিয়েছেন তিনি। টিউশনি করে চালান নিজের পড়াশোনা। এই লড়াইয়ের নিদর্শন স্বরূপ এবার সফলতা এল তাঁর ঘরে। নিজের সাফল্যে কি বলছেন জয়বাহাদুর? তাঁর কথায়, ” অনেক বছর ধরেই সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসছিলাম। এবারে এই পরীক্ষা দিই। সাফল্য পাবেন বুঝতে পেরেছিলাম। খুব খুশি আমি ও আমার পরিবার।” আজকের পরীক্ষার্থীদের জন্য নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন জয়বাহাদুর রাই।