দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আগামী ১৬ নভেম্বর, মঙ্গলবার থেকে খুলতে চলেছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল। দীর্ঘ দু’বছর পর স্কুল খোলা নিয়ে ছাত্র- ছাত্রী এবং অভিভাবকদের মনে কিছুটা আনন্দের সৃষ্টি হলেও, এর মাঝেই অভিভাবকদের নিজেদের সন্তানদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে মনের মধ্যে ভয়ও সৃষ্টি হচ্ছে। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সম্পুর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলবে ক্লাস। তবুও যেন অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন।
অভিভাবকদের চিন্তার অবসান ঘটিয়ে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক ঘোষণার মধ্য দিয়ে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যই সবার আগে অগ্রাধিকারযোগ্য। সেক্ষেত্রে অভিভাবকরা চাইলেই তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারেন। অন্যথায় নয়। স্কুল খোলার পর স্কুলে আসতেই হবে তার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ছাত্র- ছাত্রীদের স্কুলে আসা নিয়ে কোনোরকম জোর করতে পারবে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিবাবকরা সন্তানদের স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে স্কুলে পাঠাতে পারেন। তবে সেটা বাধ্যতামূলক নয়।
অন্যদিকে রাজ্যের স্কুল খোলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল, মামলার শুনানিতে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে,রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ নভেম্বর থেকেই খুলবে স্কুল। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রবাশ শ্রীবাস্তব মামলাকারীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর কোনো পড়ুয়াদের অভিভাবক আদালতে এলেন না কেন? তাঁরা যদি মনে করতেন তাদের সন্তানরা স্কুল খোলায় অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে, তাহলে তাঁরা অবশ্যই আদালতের দ্বারস্থ হতেন। তাহলে আপনি এই মামলা করেছেন কার স্বার্থে?
রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে। যেখানে গত দুই বছর ধরে রাজ্যের স্কুল- কলেজগুলোতে পঠন- পাঠন বন্ধ, যার ফলে পড়ুয়ারা তাদের পড়াশোনার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে স্কুল খোলাটা একটা আনন্দের বিষয়। তবে মামলাকারী বলেন, ‘আমি স্কুল বন্ধ রাখার পক্ষে নই। আমি ছাত্রদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’ সুতরাং সমস্ত ঝঞ্ঝাট কাটিয়ে ১৬ নভেম্বর থেকে খুলতে চলেছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল।