চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে সশরীরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছনো, তার আগেই মুখোমুখি অপেক্ষায় একাধিক বাধা! কখনও বহুদূরে পরীক্ষার সেন্টার তো কখনও যানবাহনের অভাব। বাহন পেলেও রয়েছে সমস্যা। ভোর থাকতে রওনা দিলেও পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছনোই যেন আরেক ‘পরীক্ষা’! এরকমই একাধিক সমস্যার সম্মুখীন কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গের চাকরিপ্রার্থীরা। সম্প্রতি এই সমস্যাগুলি সামনে রেখেই সোচ্চার হন কোচবিহারের এক চাকরিপ্রার্থী তরুণী। ইতিমধ্যেই ভাইরাল তাঁর ফেসবুক ভিডিও।
ভিডিওটি দেখলে বোঝা যায়, শুরুতেই তরুণীর বক্তব্য উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম কোনোও বঙ্গের বিভাজনেই উৎসাহিত নন তিনি। তার বদলে তিনি তুলে ধরতে চান কোচবিহারে বসবাসরত চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের বর্তমান সমস্যার কথা। তাঁর কথায়, সাধারণত চাকরি পরীক্ষা গুলির সেন্টার কলকাতা, গুয়াহাটি এবং কখনও কখনও শিলিগুড়িতে পড়ে। এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই যাতায়াত সমস্যা যথেষ্ট কষ্টকর। এছাড়া কলকাতা কিংবা গুয়াহাটিতে পরীক্ষা পড়লে বেশ কিছুদিন আগেই ট্রেনের টিকিট কাটতে হয়। কিন্তু টিকিট কাটার পর্যাপ্ত সময় কই? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেকোন কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের চাকরির পরীক্ষায় অ্যাডমিট কার্ড প্রকাশিত হয় পরীক্ষা শুরুর তিন-চারদিন আগে। এই এতটুকু সময়ে টিকিট কাটা সহ যাতায়াতের বন্দোবস্ত করা রীতিমতো ঝক্কির! একই সাথে স্বল্প সময়ে টিকিট বুকিংয়ের জন্য যে অর্থ ব্যয় করতে হয়, তাও নেহাত কম নয়।
অন্যদিকে কখনও সখনও শিলিগুড়িতে পরীক্ষা পড়লেও সমস্যা রয়েই যায়। সকালে পরীক্ষা পড়লে সকাল সকাল বাস পাওয়া যায় না, আর রাতে পরীক্ষা পড়লে মেলে না ফেরার বাস। আবার বাস পেলেও অর্ধেক পথ গিয়ে থেমে যায় বাহন। এই ঘটনাকে ভিডিওতে ‘বাহনের অভিমান’ বলে উল্লেখ করেছেন তরুণী। তখন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিকল্প পথের অনুসন্ধান করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছতে হয় তাঁদের। তরুণীর দাবি, এই এত সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে ইদানিং বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকছেন!
এই সমস্যার সমাধান কি আদৌ আছে? স্বতন্ত্র রাজ্য রূপে উত্তরবঙ্গের প্রতিষ্ঠাই কি সমাধান সূত্র? এর উত্তর নেই কারোর কাছেই। তবে অনেকেই ভিডিওটির কমেন্টে জানিয়েছেন রাজ্য ভাগ এর সমাধান নয়, বরং আবেদনকারী প্রার্থীদের বাড়ির কাছাকাছি পরীক্ষা কেন্দ্র দেওয়ার দাবি করাটাই যুক্তিযুক্ত। বর্তমানে যথেষ্ট ভাইরাল ভিডিওটি। আগামী দিনে এই সমস্যার যাতে প্রতিকার হয়, কার্যত সেদিকেই তাকিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা।