রাজ্যে স্কুল শিক্ষক নিয়োগে প্রবল দুর্নীতি হয়েছে। এর সত্যতা বারংবার উঠে এসেছে ইডি এবং সিবিআই-এর তদন্তে। চাকরির পরীক্ষায় পাস করেও মেধা তালিকা স্থান পাননি এমন মেধাবী ছাত্ররা রাস্তায় আন্দোলনরত। অপরদিকে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শিক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পেশায় প্রবেশ করেছেন অযোগ্যরা। কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলা করা হলে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বারবার ঐতিহাসিক রায় দিয়ে জনগণের মসিহা হয়ে উঠেছেন।
পুজোর প্রাক্কালে জাস্টিস অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হাইকোর্টের এজলাসে বলেছিলেন, বেআইনিভাবে দুর্নীতি করে যারা নিয়োগ পত্র পেয়েছেন তারা অতি শীঘ্রই চাকরি থেকে পদত্যাগ করুন অন্যথায় হাইকোর্ট ব্যবস্থা নেবে এবং তার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যদি বেআইনিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা স্বইচ্ছায় পদত্যাগ না করেন, তাহলে হাইকোর্টের নির্দেশে পরে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে, সেইসঙ্গে যাতে ভবিষ্যতে অন্য কোন সরকারি চাকরি না পায় তার ব্যবস্থাও করবে কলকাতা হাইকোর্ট।
এরই মধ্যে পুজোর ছুটির আগেই দেখা গেছে একের পর এক স্কুল থেকে উধাও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীগণ। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের একাংশ পুজোর ছুটির আগে থেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ফলত বিভিন্ন মহলের ধারণা এরা হয়তো বেআইনিভাবে ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাই চাকরি যাওয়ার ভয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পেশ করা রিপোর্টে দেখা গেছিল গ্ৰুপ সি তে ৩৪৮১ জন এবং গ্ৰুপ ডি তে ২৮২৩ জনের নিয়োগে গোলযোগ ছিল। শুধু তাই নয় নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ এর নিয়োগেও বিপুল বেনিয়ম হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
প্রাইমারি টেট পরিবেশ বিদ্যা প্র্যাকটিস সেট
প্রাইমারি টেট শিশুবিকাশ প্র্যাকটিস সেট
বেশিরভাগ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীগণ অনুপস্থিতের ঘটনা ঘটছে মুর্শিদাবাদ, মালদা, হাওড়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। অন্যান্য জেলায় এর মাত্রা কিছুটা কম। যেমন, স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি নথি থেকে স্পষ্ট মুর্শিদাবাদের সাহাপুর সান্তাল হাইস্কুল এবং লস্করপুর হাইস্কুল (H.S), কাজীপাড়া হরিদাস বিদ্যাভবন ইত্যাদি হাইস্কুলে বহু শিক্ষকের অনুপস্থিতি বেশ ভাবিয়ে তুলেছে জনগণকে। তাহলে এরাই কি সেই তথাকথিত বেআইনি ভাবে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়া অযোগ্য শিক্ষক?