ভারতের হাজার হাজার প্রার্থীর স্বপ্নের চাকরি হল ইউপিএসসি (UPSC)। কিন্তু দেশের উচ্চপদস্থ অফিসার পদে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন থাকলেও তা পূরণ করতে কালঘাম ছোটে অনেকের। তবে যাঁদের মনের জেদ ও একাগ্রতা সঙ্গী হয়, তাঁরা কোনো পরিস্থিতিতেই হার মানতে নারাজ। সমস্ত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে চলাই তাঁদের মূলমন্ত্র। তাঁদের পরিশ্রম ও একাগ্রতা এনে দেয় সাফল্য। তাঁদের কাহিনী অনুপ্রাণিত করে আগামী দিনের পরীক্ষার্থীদের। আজকের এই প্রতিবেদনে বিজ্ঞানী কার্তিক কনসালের কাহিনী তুলে ধরা হল যিনি হুইলচেয়ারে বসেই স্বপ্নজয়ের দৃষ্টান্ত রেখেছেন।
ছোটবেলাতেই বিজ্ঞানী কার্তিক কনসাল কঠিন শারীরিক ব্যাধির সম্মুখীন হয়েছিলেন। মাত্র আট বছর বয়সে মাসকুলার ডিস্ট্রোফিতে আক্রান্ত হন কার্তিক। শারীরিক দুর্বলতা আর ক্লান্তিতে যখন ঝুঁকে পড়তেন তিনি, তখনই তাঁকে শক্তি জোগাতো তাঁর স্বপ্ন। পড়াশোনায় বরাবরই ভালো ছিলেন কার্তিক। ২০১৮ সালে তিনি আইআইটি স্নাতক পাশ করেন। বসতেন নানান কঠিন পরীক্ষায়। তিনি ইউপিএসসির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস পরীক্ষা-সহ একাধিক পরীক্ষায় পাশ করেন। কিন্তু শারীরিক অক্ষমতা বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় প্লেসমেন্ট পাননি তিনি। সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে কার্যত ভেঙে পড়েছিলেন কার্তিক। তাও হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না। তাঁর প্রশাসনিক পদে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্ন তাঁকে ফের ফিরিয়ে দেয় যুদ্ধের ময়দানে।
আরও পড়ুনঃ বাসচালকের মেয়ে উত্তীর্ণ হলেন UPSC পরীক্ষায়
দিন রাত এক করে পরিশ্রম করতেন কার্তিক। কাজের পাশাপাশি চলত পড়াশোনা। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO)-তে চাকরির দরবার আগেই করেছিলেন তিনি। তবে তাঁর স্বপ্ন পূরণের জন্য বাকি ছিল আরও কিছু ধাপ। তাঁর কথায়, সকালে অফিসে রওনার আগে ও রাতে অফিস থেকে ফিরে পড়াশোনা করতেন। কাজের সঙ্গে মনোনিবেশ ছিল পঠনপাঠনে। সমাজের হাজারো কটূ কথা ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে ২০২১ সালের UPSC সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ২৭১ র্যাঙ্ক করেন কার্তিক কনসাল। হুইল চেয়ারে বসেই তিনি জয় করেন তাঁর স্বপ্নের পৃথিবী। বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় ISRO-তে কর্মরত তিনি। আজ দেশের সমস্ত ছাত্রছাত্রীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন বিজ্ঞানী কার্তিক কানসাল।