প্রতি বছর ইউপিএসসি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বসেন হাজার হাজার পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে কেউ পাশ করেন, কেউ করেন না। এই পরীক্ষা দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি। ফলে পরীক্ষা প্রস্তুতিও যথেষ্ট পরিশ্রমের। তবে আমাদের আশেপাশে এমন অনেকে আছেন যাঁরা জীবনযুদ্ধে হাল ছাড়তে নারাজ। তাঁরা স্বপ্ন পূরণের জন্য যে কোনো প্রতিবন্ধকতা পেরোতে প্রস্তুত। তেমনই একজন হলেন IAS প্রীতি হুডা। অভাব ও প্রতাকূলতাকে জয় করেই আজ দেশের উচ্চপদস্থ অফিসার পদে আসীন তিনি।
হরিয়ানার বাহাদুরগড়ের বাসিন্দা IAS প্রীতি হুডা ছোটো থেকেই ছিলেন মেধাবী ছাত্রী। নানান বিষয়ের পড়াশোনায় আগ্রহ ছিল তাঁর। তবে দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না আসায় কিছুটা ভেঙে পড়েন প্রীতি। তবে সে সময়েই বুঝেছিলেন হাল ছাড়লে চলবে না। প্রাণপণে খেটে দ্বাদশ শ্রেণীতে আনেন ৮৭ শতাংশ নম্বর। এরপর দিল্লির এক কলেজে হিন্দিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভর্তি হন প্রীতি। ভালো ফল করায় সুযোগ পান পিএইচডিতেও। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিন্দিতে পিএইচডি করেন তিনি। প্রীতির বাবা পেশায় বাসচালক হওয়ায় আর্থিক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হত তাঁকে। এর পাশাপাশি তিনি ছিলেন হিন্দি মাধ্যমের ছাত্রী। ফলে উচ্চশিক্ষায় অংশ নিলে তাঁকে লড়ে আসন অধিকার করতে হবে বলেই মনে মনে জানতেন প্রীতি।
আরও পড়ুনঃ চতুর্থবারের চেষ্টায় UPSC পাশ করলেন পূজ্য প্রিয়দর্শিনী
তবে কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েই দমে যেতে চাননি প্রীতি হুডা। তাঁর স্বপ্ন ছিল UPSC। আর তাই শুরু হয় তাঁর দিবারাত্র পরিশ্রম। UPSC-তে নিজের ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে হিন্দিকে বেছে নিয়েছিলেন প্রীতি। পাশাপাশি পরীক্ষায় তাঁর মাধ্যম হিসেবে তিনি হিন্দিকেই বেছে নেন। প্রথমবার UPSC পরীক্ষার রেজাল্ট প্রীতির স্বপ্ন সফল করতে পারেনি। পরাস্ত হয়ে ফিরে আসেন তিনি। এরপর ফের শুরু করেন পরীক্ষা প্রস্তুতি। শুরু হয় আরও কঠিন পরিশ্রম। এরপর ২০১৭ সালে ফের পরীক্ষায় বসেন প্রীতি হুডা। আর সেবারেই হল লক্ষ্যভেদ। সেবার সর্বভারতীয় ২৮৮ র্যাঙ্ক করে IAS হিসেবে নির্বাচিত হন প্রীতি হুডা। তাঁর এই হার না মানা কাহিনী আজ দেশের সকল ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা।