স্বপ্নপূরণ করার জন্য মানুষকে শুধু পরিশ্রমী হলেই হয়না। সঙ্গে থাকতে হয় জেদ ও মনের ইচ্ছে। জীবনের কঠিনতম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েও হাল না ছাড়া মানুষরা ঠিকই প্রমাণ করেন যে, স্বপ্নজয় সম্ভব। তেমনই এক অনুপ্রেরণা জোগানো কাহিনী আইপিএস এন অম্বিকার। মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিয়ের পর সংসার সামলেও একজন সফল আইপিএস অফিসার হয়ে উঠেছেন তিনি।
তামিলনাড়ুর বাসিন্দা অফিসার এন অম্বিকা। ছোটবেলা থেকেই সিনিয়র অফিসার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক টানাপোড়েনের ফলে বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় তাঁর। মাত্র ১৮ বছরে দুই সন্তানের মা হন তিনি। অফিসার এন অম্বিকার স্বামী ছিলেন পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত। একবার প্রজাতন্ত্র দিবসের উদযাপনে গিয়েছিলেন এন অম্বিকা। সেখান থেকেই রীতিনীতির আড়ালে চাপা পড়া তাঁর স্বপ্ন ফের পুনরুজ্জীবিত হয়। শুরু হয় ডিসটেন্স লার্নিংয়ে পড়াশোনা। কিছুদিনের মধ্যেই দশম, দ্বাদশ ও স্নাতকের ডিগ্রি অর্জন করে নেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ সাত বারের ব্যর্থতা পেরিয়ে অষ্টমে লক্ষ্যভেদ রামভজনের
স্নাতক হওয়ার পর শুরু করেন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি। কিন্তু তিনি যেখানে থাকতেন সেখানে না ছিল কোনো কোচিং আর না ছিল প্রস্তুতি নেওয়ার সঠিক জায়গা। আর তাই ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য চেন্নাই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু তাঁর সন্তানরা থাকবে কোথায়? এ সময় তাঁকে আশ্বস্ত করেন তাঁর স্বামী। সন্তানদের দেখাশোনার ভার নেন তিনি। অফিসার অম্বিকা জানিয়েছেন, তাঁর স্বপ্নপূরণে সবসময় পাশে ছিলেন তাঁর স্বামী। এরপর চলে কঠোর পরিশ্রম ও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা। প্রতিদিন সংবাদপত্র পাঠ করতেন অফিসার অম্বিকা। তাঁর মতে এটি ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য অপরিহার্য। সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC) পরীক্ষায় বসেন তিনি। কিন্তু একবারেই সফলতা আসেনি। চার বার পরীক্ষা দেন। চতুর্থ বারের পরীক্ষায় বাজিমাত করেন তিনি। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আজ একজন সফল আইপিএস অফিসার এন অম্বিকা।