বিকল্প কর্মসংস্থানের নতুন একটি প্রতিবেদন। আপনি যদি কোন চাকরি না পেয়ে থাকেন, নতুন কিছু করার চেষ্টা করছেন তাহলে এই প্রতিবেদন টা আপনার জন্য। আজকের এই প্রতিবেদনে আপনাদের সাথে এমন একটি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করব, যেখানে স্বল্প মূলধন বিনিয়োগ করে প্রতিমাসে 50000 টাকা রোজগার করতে পারবেন। স্বল্প পুঁজির অন্যতম একটি ব্যবসা হল পাটের ব্যাগ তৈরীর ব্যবসা। তাই এই ব্যবসা করে খুব অল্প সময়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে পারবেন। বর্তমানে দেশ ও বিশ্ব বাজারে পাটের চাহিদা রয়েছে। পাটের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের ব্যাগের প্রতি মানুষের ঝোঁক রয়েছে। তাই অল্প পুঁজি বিনিয়োগে পাটের তৈরি ব্যাগের ব্যবসা করে আপনিও অনেক লাভবান হবেন। এই ব্যবসা সম্পর্কে কিছু তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কেন এই ব্যবসা করবেন?
অল্প পুজিতে লাভজনক ব্যবসা গুলোর মধ্যে পাটের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা একটি অন্যতম ব্যবসা। বাড়িতে থেকে এই ব্যবসা শুরু করা যায়। সেক্ষেত্রে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা বিশেষ করে মহিলারাও এই ব্যবসার কাজের সহযোগিতা করতে পারবেন। তাই স্বল্প পুজিতে আপনি যদি কোনো ভালো ব্যবসার সন্ধানে থাকেন। তাহলে নিঃসন্দেহে এই ব্যবসার জন্য উদ্যোগী হতে পারেন।
প্রয়োজনীয় কাঁচামাল-
পাটের ব্যাগ তৈরির জন্য প্রয়োজন কয়েকটি সেলাই মেশিন, দুটি হেভি ইউনিটের মেশিন, কাঁচি, ও সুতলি। এই সমস্ত উপকরণ বাজার থেকে কিনতে খরচ পড়বে প্রায় 30 হাজার টাকা। এছাড়াও ব্যাগ তৈরীর জন্য চাই পাটের তৈরি মসৃণ চট যার বাজার মূল্য গজ প্রতি কমবেশি 800 টাকা মতো। সুতরাং এই ব্যবসা শুরু করতে তেমন কোনো মূলধন লাগছে না।
পদ্ধতি-
ব্যাগ তৈরীর ক্ষেত্রে পাটের তৈরি চট ব্যবহার করা হয়। কারণ পাট দিয়ে সরাসরি ব্যাগ তৈরি করা যায় না। তার জন্য ভালো মানের পাটের চট কিনতে হবে বা পাট কিনে মেশিনের বুনে নিতে হবে। যত সাইজের ব্যাগ তৈরি করবেন সেই রকম মেপে কেটে নিতে হবে। এরপর বিভিন্ন রঙ্গিন সুতো দিয়ে মেশিনে ডিজাইন করে সেলাই করতে হবে ব্যাগের আকর্ষণ বাড়াবার জন্য নজরকাড়া নকশাও করতে পারেন। শেষে ফিতে দিয়ে ব্যাগের বেল্ট তৈরি করতে হবে।
মার্কেটিং-
ব্যাগগুলি বিক্রির জন্য ভালো বাজার ধরে রাখতে হবে। আর তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ব্যবসায়ীর সাথে আগে থেকে কথা বলে নিতে হবে। বিভিন্ন ছোট বড় ব্যাগ বিক্রির দোকান গুলির সাথে আলোচনা করতে হবে। ব্যবসার প্রসার বাড়ানোর জন্য প্রথম প্রথম স্বল্পমূল্যে কিংবা ‘একটা কিনলে একটা ফ্রি’ প্রভৃতি কৌশলের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হবে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাগ তৈরি করতে হবে।
ব্যবসার লাভ-
বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের ব্যাগের আলাদা আলাদা মূল্য নির্ধারিত হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র লাভ লোকসান -এর ধারণা দেওয়ার জন্য একটি হিসাব আলোচনা করা হলো।
কলেজের ব্যাগ (1 টি) মূল্য- 170/- টাকা, অফিস ব্যাগ (1 টি) মূল্য- 200/- টাকা, ভি.আই.পি ব্যাগ (1 টি) মূল্য- 270/- টাকা, পার্স বা মানিব্যাগ (1 টি) মূল্য- 20/- টাকা ও টিফিন ব্যাগ (1 টি) মূল্য- 140/- টাকা।
যদি 2 জন কারিগর দিয়ে 1 মাসে 100 টি কলেজ ব্যাগ, 150 টি অফিস ব্যাগ, 50 টি ভি.আই.পি ব্যাগ, 100 টি মানিব্যাগ ও 50 টি টিফিন ব্যাগ তৈরি করা যায়, তাহলে সবগুলো ব্যাগের মোট মূল্য হবে 69,500/- টাকা .
দুজন কারিগর মাসিক বেতন 7000 টাকা এবং ব্যাগ তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জন্য খরচ প্রায় 30 হাজার টাকা ধরলে। মাসিক মোট লাভের পরিমান 69,500 – (30000 + 14000) = 25,500/- টাকা। এই লাভের পরিমান ব্যবসা শুরুর প্রাথমিক অবস্থায় হবে। তবে বাজারের চাহিদা বাড়লে প্রতিমাসে অন্তত 50 হাজার হাজার টাকা লাভের মুখ দেখা যেতে পারে।
সুতরাং বলা যায়, পাটের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা হলো একটি লাভজনক ব্যবসা। তবে এক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনাও রয়েছে। বাজারের পণ্য চাহিদার উপর পুরোটাই নির্ভরশীল। যে কোন ব্যবসা মানেই লাভ – লোকসানের ঝুঁকি থাকবেই। সঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারলে আপনিও অল্প সময়ের মধ্যে বড় মাপের ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন এবং বেকার জীবন থেকে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবেন।