বর্তমানে লক্ষীর ভান্ডার ও কন্যাশ্রীর মত যে সকল প্রকল্পে সরকার টাকা প্রদান করে থাকে সেই সকল প্রকল্পগুলি নিয়ে একটি নির্দেশ জারি করা হয়েছে । আসলে এইসব প্রকল্পগুলিতে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে একটি নতুন নিয়ম কার্যকর করতে চলেছে সরকার, সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক একাউন্টের ক্ষেত্রে ভুল থাকলে টাকা পেতে সমস্যা হবে। আসলে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের জন্য প্রদত্ত টাকা নয় ছয় হওয়ার পর অর্থ দপ্তর এই প্রকল্পগুলিতে টাকা পাঠানো প্রসঙ্গে ১৬ দফার নতুন নির্দেশ জারি করেছে। নবান্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী রাজ্যের যে সকল দফতর বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেয় তাদের জন্যই ১৬ দফা নির্দেশিকা জারি হয়েছে।
লক্ষীর ভান্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে দিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যেকটি ভোটে বিপুল ভোট ব্যাঙ্কের পিছনে এই প্রকল্পগুলিই হল বড় কারণ। তবে ট্যাব কান্ডের পর বিরোধীরা নানান রকম প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাদের বক্তব্য রাজ্যের জনহিতকর প্রকল্পগুলি থেকে সাধারণ মানুষ সত্যি ঠিক কতটা সুবিধা পাচ্ছেন? এই প্রশ্নের মুখে পড়ে ও কন্যাশ্রী প্রকল্পের মত নিজের চালু করা যাবতীয় প্রকল্পকে সুসংহত করতে ও কোনরকম ভুল ত্রুটি যাতে না হয় সেই কারণে ১৬ দফা নির্দেশ কার্যকর করতে চাইছেন মাননীয়া।
১) উপভোক্তার ব্যাঙ্ক একাউন্টে টাকা পাঠানোর আগে দুইবার করে ব্যাঙ্ক একাউন্ট নম্বর ও যাবতীয় তথ্য ভালো করে দেখে নেওয়া হবে। যাতে কোনও ভুল না হয়।
২) কোনও উপভোক্তার ব্যাঙ্ক একাউন্টে টাকা পাঠানোর আগে তার ব্যাঙ্ক পাস বইয়ের প্রথম পাতার প্রতিলিপি অথবা ক্যানসেল চেক করে নিতে হবে। যেখানে উপভোক্তার নাম, অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও আইএফএসসি থাকবে।
৩) উপভোক্তা কোন প্রকল্পে টাকা পাচ্ছেন সেটি সম্পর্কে দপ্তরকে সতর্ক থাকতে হবে।
৪) একটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট যেন একাধিক উপভোক্তা ব্যবহার না করেন।
আরও পড়ুনঃ মেয়েদের জন্য দুর্দান্ত স্কলারশিপ, কীভাবে আবেদন করা হবে জানুন
৫) উপভোক্তার আইএফএসসি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তালিকা দেখে যাচাই করে নিতে হবে।
৬) যে একাউন্টে টাকা পাঠানো হচ্ছে ব্যাঙ্কের সেই শাখাটি যেন রাজ্যের অন্তর্গত হয়।
৭) লেনদেন অটো ক্যান্সেল হলে নতুন করে টাকা পাঠাতে হবে।
৮) এন পি সি আই এল উপভোক্তার তথ্য যাচাই করবে।
৯) সবকিছু যাচাইয়ের পর যেন টাকা দেওয়া হয় ।
১০) উপভোক্তার নাম, ব্যাঙ্ক একাউন্টে কোনও কিছু গরমিল পেলে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।
১১) ব্যাঙ্কের গ্রুপ এ এর নিচু পদের কোনও আধিকারিক যেন একাউন্টের অনুমোদন না দেন।
১২) টাকা পাঠানোর পর উপভোক্তাকে এসএমএস করে জানাতে হবে।
১৩) অনলাইনে আবেদন করা হয়ে গেলে অফলাইনে কিছু করা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ বিনামূল্যে স্পোকেন ইংলিশ ক্লাস করার সুযোগ, কীভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন
১৪) অফলাইনে এমনভাবে আবেদন করতে হবে যাতে সব তথ্য যাচাই করা যায়।
১৫) টাকা পাঠানোর পোর্টাল ও বিভাগীয় পোর্টালের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।
১৬) যেসব দফতর টাকা পাঠায় তাদের মাসিক অথবা ত্রৈ-মাসিক পর্যালোচনার স্টেটমেন্ট থাকতে হবে।
অর্থাৎ, এই ১৬ দফার নির্দেশের মধ্যে কোনও একটি ক্ষেত্রে যদি সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কন্যাশ্রী প্রকল্প ও লক্ষীর ভান্ডারের মত প্রকল্পগুলিতে উপভোক্তারা টাকা পাবেন না। তাই কন্যাশ্রী প্রকল্পের ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের উচিত অনলাইনে আবেদন করলে অফলাইনে আলাদা করে আবেদন না করা , কারণ এক্ষেত্রে আবেদনটি বাতিল হয়ে যেতে পারে আর একবাড়ির দুই বোন থাকলেও একটি অ্যাকাউন্ট নাম্বার কখনোই দেওয়া উচিত নয় , এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের নাম ও প্রদত্ত ব্যাঙ্ক একাউন্টে কোনও সমস্যা যাতে না থাকে , সেই বিষয়টি ও অভিভাবকদের নজর দেওয়া উচিত। কারণ এইসব ছোটখাটো ভুল ত্রুটি গুলোর জন্য আটকে যেতে পারে কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রাপ্য টাকা।