দিদির অনুপ্রেরণায় এমএ পাস যুবক এখন স্বনির্ভর চপ শিল্পী। বিভিন্ন ভাষণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের উদ্দেশ্যে বলতে গিয়ে বারংবার চপ শিল্পের প্রসঙ্গ টেনেছেন। শিক্ষিত বেকারদের বসে না থেকে প্রয়োজনে চপ ভাজা বিক্রি করে রোজগারের জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর এই পরামর্শকে অনেকে কটাক্ষ, বিদ্রুপ ও তাচ্ছিল্যের নজরে দেখলেও বিশ্বজিৎ কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটিয়েছেন।
দিদির অনুপ্রেরণাতেই, তেলেভাজার দোকান দিয়ে বাস্তবে আজ নিজেকে স্বনির্ভর করে তুলেছেন পুরুলিয়ার যুবক বিশ্বজিৎ কর মোদক। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত তেলেভাজা বিক্রি করে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকা রোজগার বিশ্বজিৎ -এর। পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের বিশ্বজিৎ এমএ পাশ করেছেন। উচ্চ ডিগ্রীপ্রাপ্ত হয়েও এইরকম একটি চপ ভাজা দোকান চালানো কাজকে ছোট মনে করেননি তিনি। সম্প্রতি হাবড়ার টুকটুকি দাস ইংলিশে এমএ পাশ করেও স্টেশনে চা বিক্রির দোকান চালু করেছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ইংলিশ চায়ওয়ালি’ নামে ভাইরালও হয়েছেন। এবার সেই রকমই ঘটনা নজরে পড়লো পুরুলিয়ার বান্দুয়ান ফরেস্ট মোড়ে। যেখানে এমএ পাস যুবক বিশ্বজিৎ চপ বিক্রি করে দিব্যি আরামে সংসার চালাচ্ছেন।
স্নাতকোত্তর পাশ করা বিশ্বজিৎ, বান্দোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন বা ভিআরপি পদে দিনে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ভাতা হিসেবে পেতেন। দৈনিক ১৫০ টাকা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলতো। গত জুন মাস থেকে ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুব বিপদে পড়েন তিনি। অর্থের অভাবে সংসারের হাল শোচনীয় হয়ে উঠে। এমতাবস্থায়, নিজের জমানো সামান্য পুঁজি দিয়ে তেলেভাজার দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। দোকান খুলেই ভালো বাজার তৈরি করে নেন বিশ্বজিৎ। দোকানের গায়ে বড় একটা ব্যানারে দোকানের নামও দিয়েছেন তিনি, ‘মা মনসা চপ শিল্প’ l এ যেন বেকার জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্ত কোনো এক জীবনের চিত্র সংলাপ বটে। বিশ্বজিৎ -এর জীবন কাহিনী রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের কাছে একটি অনুপ্রেরণা বলা যায়। তবে উচ্চশিক্ষিত বিশ্বজিৎ -এর তেলে ভাজা দোকান চালু করা নিয়ে রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ বলছেন, ‘এ সরকারের নিয়োগ ব্যর্থতার ফল ছাড়া আর কিছুই নয়।