দুবেলা পেটপুরে খাবার জোগাড় করার টাকা নেই। কোনোমতে আধপেটা খেয়েই চলত দিন। শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও স্বপ্নের হাত ছাড়েননি প্রেরণা। কঠিন অধ্যাবসায় আর অদম্য জেদ তাঁকে পৌছে দিল স্বপ্নের দোড়গোড়ায়। সদ্য প্রকাশ পেয়েছে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট স্নাতক (নিট ইউজি) পরীক্ষার ফলাফল। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখন ডাক্তার হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছেন রাজস্থানের মেয়ে বছর কুড়ির প্রেরণা সিং।
রাজস্থানের কোটার মহাবীর নগরের বাসিন্দা প্রেরণা। বরাবরই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। প্রেরণার বাবা ছিলেন পেশায় অটোচালক। ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি তৈরি করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে তাঁর ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রেরণা তখন দশম শ্রেণীর ছাত্রী। শরীরে ধরা পড়া কর্কট রোগে মৃত্যু হয় প্রেরণার বাবার। একেই ছিল অর্থাভাব, তার মধ্যে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় প্রেরণার পরিবার। ঋণ শোধ করতে না পারায় বাড়ি খালি করার নোটিশ দেয় ব্যাঙ্ক। সেসময় দুবেলা খাবার জোগাড় করাও সম্ভব হত না। আধপেটা খেয়েই দিন কাটত তাঁদের। প্রেরণা জানান, রুটি চাটনি খেয়ে দিন কাটাতেন তাঁরা। কোনো কোনো দিন ক্ষুধার্ত পেটেই ঘুমিয়ে পড়তে হত। তবে এত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও হেরে যাননি প্রেরণা। তাঁর লক্ষ্য ছিল অবিচল। দিন রাত এক করে তাই পরিশ্রম করে গিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম ও নিট পরীক্ষায় দ্বাদশ কলকাতার সায়ন
প্রেরণা জানান, নিট পরীক্ষায় সফল হওয়া ছিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। আর তাই একটানা পরিশ্রম করতে একবারও পিছপা হননি তিনি। পরীক্ষার জন্য তিনি দিনে ১২ ঘন্টা করে পড়তেন। পাশাপাশি, কোচিংয়েও পড়তে যেতেন তিনি। এবছর ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রেরণা। সেই পরীক্ষায় ৬৮৬ তম স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চান প্রেরণা। আগামী দিনের ছাত্রছাত্রীদের কাছে তিনি একজন অনু’প্রেরণা’ হয়ে থাকবেন।