কোভিডের সময় থেকেই ঝকঝকে পোস্টারের ‘নামী’ কোচিং সেন্টারগুলির দিকে ক্রমশ আগ্রহ বেড়েছিল অভিভাবকদের। সেই আগ্রহের স্থায়ীত্ব বাড়াতে ইদানিং নানান অভিনব পন্থা বানাচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলি। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কিভাবে স্টুডেন্ট আনা যায় তার জন্য রয়েছে হরেক রকম কৌশল! কালিং বেল বাজিয়ে, যেচেই দুয়ারে পৌছে যাচ্ছে এডুকেশন সেন্টারের নামী দামি স্কিম! একদল আগন্তুক বাড়ির দরজায় এসে আপনাকে জানিয়ে দেবে কোন কোর্সের কত সুবিধা। আজকাল এই আগন্তুকদেরই নাম দেওয়া হয়েছে ‘এডুকেশন সেলসম্যান’। আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে বিস্তারিত।
পড়াশোনা মানেই এখন স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট। দিন বা সপ্তাহের নির্দিষ্ট সময়ে ফোনের স্ক্রিনে চোখ, কানে হেডফোন, চলছে পঠনপাঠন। পড়ানোর ধরণ আবার আলাদা। কোনো বিষয়ে বুঝতে সমস্যা হলে অপেক্ষা করতে হবে পরের ক্লাসের জন্য। ডিজিটাল হচ্ছে দেশ, ডিজিটাল হচ্ছে পড়াশোনা। প্রায়শই অভিভাবকদের গর্ব করে বলতে শোনা যায় অমুক কোচিং সেন্টারের তমুক কোর্সে পড়ছেন তাঁদের সন্তানেরা। ভর্তির সময়ই বলা হয়েছিল ‘এখানে পড়লে চাকরি পাকা’! কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বিনিময়ে এই সকল স্টাডি সেন্টারের দিকে ছুটছেন দলে দলে ছাত্রছাত্রী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। অভিনেতা, অভিনেত্রীদের দিয়ে চলছে মার্কেটিং। স্টুডেন্ট টানতে দুয়ারে দুয়ারে উপস্থিত হচ্ছেন সেন্টারের প্রতিনিধিরা। কে কত স্টুডেন্ট ভর্তি করাতে পারেন তাঁর উপর চলছে প্রতিযোগিতা।
আরও পড়ুনঃ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করল শিক্ষা দপ্তর
অনেক অভিভাবকদের মতে, নামী কোচিং সেন্টারগুলির প্রচার বৃদ্ধিতে কিছুটা সুফল মিললেও নানান অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে সমাজ। সরকারি বনাম বেসরকারি স্কুলগুলির প্রতিযোগিতার মতো এখন একগুচ্ছ স্টাডি সেন্টারের প্রতিযোগিতার মাঝে পড়ে নাভিশ্বাস দশা মধ্যবিত্তের। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনেক সময় লোন নিয়ে পড়াতে করাতে হচ্ছে তাঁদের। আর বছর শেষে সুফল না এলে হীনমন্যতায় ভুগছেন পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, এই সকল স্টাডি সেন্টারের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে কার্যত বিপন্ন দশা ‘পাড়ার কোচিং সেন্টারের’। এই পরিস্থিতি যে কার্যতই সঙ্কটজনক, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক মহল।