টেট নিয়ে ধুন্ধুমার রাজ্য। রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে জেরবার রাজ্য সরকার। রাজ্যের বেশ কিছু জন হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী দুর্নীতির মামলায় সিবিআই হেফাজতে। ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন সভাপতি গৌতম পাল দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে টেট পরীক্ষা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেইমতো বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিলো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই সঙ্গে ১১ হাজারেরও বেশি শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পর্ষদ। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা এই শূন্যপদে আবেদন করতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তি দ্বয় প্রকাশের পর উভয় বিজ্ঞপ্তি নিয়েই চাকরিপ্রার্থীদের অসন্তোষ এবং ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। প্রথমত বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, নিয়ম অনুযায়ী বি.এড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীরা টেট পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারেন না। এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেও এইরকম একটি মামলা সুপ্রিমকোর্টে চলছে । তাই মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর ব্যাপারটি নির্ভর করছে। অন্যদিকে প্রথমে ২০১৪ এর টেট পাশ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় সল্টলেকে। আমরণ অনশন শুরু করে এই আন্দোলনকারীরা। তাদের বক্তব্য, তারা এর পূর্বে দু’বার ইন্টারভিউ দিয়েছেন অথচ দুর্নীতির কারনে বঞ্চিত হয়েছেন এবং আবারও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে তারা অনিচ্ছুক। তাদের আন্দোলন এবং অনশন তুলে নেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করা হয়েছে পর্ষদের তরফ থেকে। কিন্তু কোনোরূপ কাজ হয়নি।
আরও পড়ুনঃ শুরু হচ্ছে প্রাইমারি টেট ইন্টারভিউ রেজিস্ট্রেশন
অপরদিকে, ২০১৭ এর টেট পাশ প্রার্থীরাও আন্দোলন শুরু করেন, বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত ১১ হাজারেও বেশি শূন্যপদে শুধু ২০১৭ এর প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে। এই দাবীতে তারাও আন্দোলন শুরু করেন। তারপরেই প্রশাসনের তরফ থেকে অতি সক্রিয়তা দেখা যায়। পুলিশ প্রথমে হাইকোর্টের ১৪৪ ধারার বর্ণনা করে, আন্দোলনকারীদের সেই স্থান পরিত্যাগ অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। মধ্য রাতে পুলিশ কার্যত জোর করেই আন্দোলনকারীদের ঐ স্থান থেকে উঠিয়ে দেয়। এরপর ২০১৭ এর আন্দোলনকারীদেরও স্থান পরিত্যাগে বাধ্য করা হয়।
অন্যদিকে এদিন সন্ধ্যা কালেই গৌতম পাল দুজন আন্দোলনকারী প্রার্থীদের সঙ্গে এক বিশিষ্ট নিউজ চ্যানেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু কার্যত সফল হয়নি। এর পরেই পুলিশের কাজে কার্যত উত্তপ্ত রাজ্য। এখন দেখার ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কি হয়? আন্দোলনকারীদের চাকরিপ্রার্থীদের দাবী কতটা পূর্ণ করে শিক্ষা পর্ষদ, তাই এখন দেখার বিষয়!