টেট পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের সর্বত্র জল্পনা তুঙ্গে। এর মধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবছর ২০২২ সালে যে সমস্ত পরীক্ষার্থীরা টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন, রেজাল্ট প্রকাশ পাওয়ার পর তাঁরা রেজাল্টের সঙ্গে উত্তরপত্র তথা OMR শিটটিও হাতে পাবেন। এবং এবার থেকে প্রতিবারের টেট পরীক্ষার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম বজায় থাকবে।
রাজ্যে প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বহুবার। কখনও নিয়োগে দুর্নীতি, কখনও পরীক্ষা পদ্ধতিতে সাদা খাতা জমা দিয়ে পাশ আবার কখনও অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে টেট পাশের অভিযোগও উঠেছে। টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রির অপবাদও বাদ যায়নি। টেট পরীক্ষার উত্তরপত্র তথা ‘ও এম আর’ শিট নিয়েও জল্পনা কিছু কম নয়। পরীক্ষার এই ‘ও এম আর’ শিট নিয়ে মামলাও চলেছে আদালতে। এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেন। পরবর্তীকালে আদালতে টেট সম্পর্কিত একটি মামলার শুনানিতে পর্ষদের আইনজীবী এ প্রসঙ্গে দাবি রাখেন যে ২০১৪ র টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রায় তেরো লক্ষের কাছাকাছি পরীক্ষার্থীদের সমস্ত উত্তরপত্র তথা ‘ও এম আর’ শিট নষ্ট করা হয়েছে। পর্ষদের আইনজীবীর এহেন বক্তব্যে বিচারপতি বলেন, “অপরাধমূলক উদ্দেশ্যেই এই কাজ করা হয়েছে”। তিনি আরও বলেন, পর্ষদের এরূপ আচরণ আদালতের কাছে সন্দেহের বাতাবরণ সৃষ্টি করছে।
আরও পড়ুনঃ ২০১৭ টেট প্রার্থীদের নম্বর তালিকা প্রকাশ
অন্যদিকে, বর্তমান পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন, এবছরের টেট পরীক্ষাকে দুর্নীতিমুক্ত রাখা হবে এবং নিরপেক্ষ পরিচালনার আওতায় আনা হবে। পরীক্ষা চলাকালীন যেমন বিভিন্ন ব্যবস্থা গৃহীত হবে তেমনই পরীক্ষার পর রেজাল্ট, মেধাতালিকা প্রকাশ ও নিয়োগের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে। সেই উদ্দেশ্যেই ফলপ্রকাশের পর পরীক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁদের উত্তরপত্র বা OMR শিট। তাতে পরীক্ষার বিষয়ে যাবতীয় সন্দেহ দূর হবে, প্রাপ্ত নম্বর সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হবে এবং প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীরা তাঁদের নম্বর নিয়ে চ্যালেঞ্জ ও করতে পারবেন। এহেন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এই সিদ্ধান্ত পর্ষদের।
রাজ্যে ১১ হাজার শূন্যপদের জন্য প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হবে। সেই উপলক্ষ্যে ডিসেম্বরের ১১ তারিখ হতে চলেছে ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট’ বা টেট পরীক্ষা। শূন্যপদের জন্য আবেদন জমা পড়েছে প্রায় সাত লক্ষের কাছাকাছি। পরীক্ষার্থীদের প্রথমে লিখিত পরীক্ষা ও পরে ইন্টারভিউ পর্যায়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। তবেই অংশগ্রহণ করতে পারবেন নিয়োগ প্রক্রিয়ায়।