উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার শিক্ষক: সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রায়দান করা হলো কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে। আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ মামলায় এদিন বিরাট সিদ্ধান্ত জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার রায়দান করা হলো। এই রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই দীর্ঘ ৯ বছর পর উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত জট কাটল। উচ্চ প্রাথমিকে প্রায় ১৪ হাজার ৫২ টি শূন্যপদে নিয়োগের ছাড়পত্র দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মেধা তালিকা থেকে বাদ যাওয়া ১ হাজার ৪৬৩ জনকে যুক্ত করে মেধা তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হলো এদিন। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং করে সুপারিশপত্র দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।
সংশ্লিষ্ট মামলা প্রসঙ্গে ২০২১ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছিল, OMR শিটগুলি পুনরায় মূল্যায়ন করে ১ হাজার ৪৬৩ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া থেকে। এদিন হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে ওই প্রার্থীদেরকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। এর কারণ স্বরূপ হাইকোর্ট জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। যে সমস্ত প্রার্থীকে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেয়া হয়েছে তারা কোথায় কত নম্বর পেয়েছেন তা জানা সম্ভব নয়। তাদের ইন্টারভিউ এবং কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে আগেই। এর ফলে নতুন করে OMR শিট মূল্যায়ন করে তাদের বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিক নয়। এরই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, বাদ যাওয়া প্রার্থীদের যুক্ত করে ১৪ হাজার ৫২ জনের মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাকরির খবরঃ রাজ্যের পৌরসভায় কর্মী নিয়োগ চলছে
দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মেধা তালিকা প্রকাশের পর সময় অনুযায়ী কাউন্সিলিং করতে বলা হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অবিলম্বে যোগ্য শিক্ষকদের সুপারিশপত্র বিতরণ করতে হবে যাতে শিক্ষক শিক্ষিকারা দ্রুত নিজেদের স্কুলে যোগ দিতে পারেন। উচ্চ প্রাথমিকে প্রায় ১০ বছর শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় বিদ্যালয়গুলি কার্যত বন্ধের মুখে আছে। এই নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে প্রথমে মামলা শুরু হয় ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে। পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি বিচারাধীন আছে। এই মামলার শুনানিতে আদালতে বারবার বেঞ্চ বদল করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৬ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্যানেল ভুক্ত ৮ হাজার ৯০০ জন প্রার্থীর কাউন্সিলিং শেষ হয়েছে। কিন্তু কাউন্সিলিং সম্পন্ন হওয়া এই প্রার্থীদের মধ্যে একজনও এখনো শিক্ষক পদে যোগ দিতে পারেননি। তাদের জয়েনিং ও বাকি শূন্যপদে ওয়েটিং লিস্টের তালিকা ভুক্তদের কাউন্সিলিং এবং জয়েনিং -এর জন্য আন্দোলন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে এবার আশার আলো দেখছেন আন্দোলনকারীরা।