ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC)-এর পরীক্ষাগুলি দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত। একবারে এই পরীক্ষায় সফল হওয়া মোটেই মুখের কথা নয়। তাই UPSC-এর প্রস্তুতি নেওয়ার সময়েই মনে রাখতে হবে কেবল যোগ্যতা নয়, ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের ধৈর্যের বিচারও করে বৈকি। আজকের প্রতিবেদনে এমন একজন সফল মানুষের কাহিনী তুলে ধরব, যিনি বছর বছর ফেলের পরেও হার না মানা জেদ নিয়ে আবারও লড়ে গিয়েছেন। সময় আসতে তাঁর ধৈর্য্য, একাগ্রতা ও পরিশ্রম তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে স্বপ্নপূরণের চাবিকাঠি। তিনি আর কেউ নন অফিসার উৎসব গৌতম। আসুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর স্বপ্নপূরণের টুকরো ইতিহাস।
উত্তরপ্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা উৎসব গৌতম ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেই আইএএস অফিসার হবেন। মেধাবী ছাত্র উৎসব দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৯১.৮ শতাংশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৮৭.৬ শতাংশ নম্বর। স্কুল শেষ করে আইআইটি পাটনায় ভর্তি হন উৎসব। স্নাতক পাশ করেন এখান থেকেই। সেই সময় তিনি ইঞ্জিনিয়ার হবেন বলেই মনোস্থির করেছিলেন। স্নাতক পাশের পর একটি ভালো সংস্থায় চাকরিও পেয়েছিলেন উৎসব। বেশ কিছুদিন কাজ করেন সেখানে। সেখানে মাসে মাসে মিলতো প্রায় লাখ টাকার মাইনে। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না উৎসব। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং নয় বরং ইউপিএসসির প্রতি তাঁর মনে রয়েছে অমোঘ টান। এরপর যেমন ভাবা তেমন কাজ। কয়েকদিনের মধ্যেই লাখ টাকা মাইনের চাকরি ছেড়ে UPSC-এর প্রস্তুতি শুরু করেন উৎসব।
আরও পড়ুনঃ UPSC-তে ১৪ র্যাঙ্ক বাংলার তরুণী অরুণিমার
দিনরাত পড়াশোনা, একটানা পরিশ্রম, মক টেস্ট, ইত্যাদির মধ্যে দিয়েই দিন কাটতো উৎসবের। তাঁর ধ্যান, জ্ঞান, মন্ত্র ছিল ইউপিএসসি। তবে এই পরীক্ষা একবারে সফল হতে দেয়নি উৎসবকে। বারেবারে নিয়েছে তাঁর ধৈর্যের পরীক্ষা। পরপর তিনবার ইউপিএসসিতে ফেল করেন উৎসব। আবার উঠে দাঁড়াতেন, আবার পরিশ্রম করতেন। অবশেষে চতুর্থবারের চেষ্টায় ২০১৭ সালে ৩৩ তম সর্বভারতীয় স্থান অর্জন করে ইউপিএসসি টপারদের মধ্যে জায়গা করে নেন উৎসব। সকল ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য কঠিন পরিশ্রম ও ইতিবাচক চিন্তার পাশাপাশি ধৈর্যও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।