শিক্ষক নিয়োগে ভয়াবহ দুর্নীতির পরিণামে আমূল ভেঙ্গে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা? কি হতে পারে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ? সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিশিষ্ট মহলে। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার এমন দুর্দশা এর আগে কখনও হয়নি। আপনারা জানেন সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে। যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা সঠিকভাবে পেশ করতে না পারায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই নিয়োগ প্যানেলটি সম্পূর্ণ বাতিল হয়েছে। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আগামী সোমবার সেই মামলার শুনানি আছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।
তবে এবার স্কুল সার্ভিস কমিশন নয়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে বাতিল হতে পারে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬, ২০২০, ২০২২ এবং ২০২৪ সালের নিয়োগপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের। এখনো পর্যন্ত ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়া প্রার্থীদের একাংশ এই নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় এই সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে ওই নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছে।
আরও পড়ুনঃ উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট প্রকাশিত হবে ৮ মে
সিবিআই -এর রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এসএসসির মতোই ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে যে ৭০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে তাতেও ব্যাপক পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। সিবিআই নিজের রিপোর্টে এও জানিয়েছে যে, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা নিয়ে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে। এই রিপোর্টের পরেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁর প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, সিবিআই -এর পেশ করা রিপোর্ট অনুযায়ী যে পরিমাণ এবং যে ব্যাপক দুর্নীতির প্রসঙ্গ এই নিয়োগে উঠে আসছে তাতে গোটা প্যানেল বাতিল করা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকবেনা। বিচারপতির এই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের কথা জানাজানি হতেই ৭০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। তবে এই বিষয়ে আদালত তড়িঘড়ি কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। সিবিআই -এর রিপোর্ট দেখে ৮ সপ্তাহ পর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মামলার সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে হলফনামা দিয়ে এই বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিচারপতি জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে চাকরিপ্রার্থীদের বৈধ OMR শিট আদালতে পেশ করতে হবে।