রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। মাধ্যমিকের পর নয়, নবম শ্রেণীর পর থেকেই ছাত্র- ছাত্রীরা নিজের পছন্দের বিভাগ (আর্টস, সাইন্স, কমার্স ইত্যাদি) নির্বাচনের সুযোগ পাবে। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, রাজ্যে মাধ্যমিকের পর ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের স্ট্রিম বেছে নিতে পারে। অর্থাৎ বিজ্ঞান, কলা এবং বাণিজ্য বিভাগ বেছে নেয় ছাত্র ছাত্রীরা। কিন্তু এই নিয়মের বদল করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এ বিষয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে। আগামী ১ লা জুন রাজ্যের নতুন শিক্ষা কমিটির যে বৈঠক আছে, বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তারপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মতামত নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর।
দিল্লি বোর্ড অর্থাৎ সিবিএসই বোর্ডে বহু পূর্বেই এই নিয়ম চালু হয়েছে। দিল্লি বোর্ডে পাঠরত পড়ুয়ারা অষ্টম শ্রেণী পাশের পর নবম শ্রেণী থেকেই পছন্দের বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দেয়। সেক্ষেত্রে, সর্বভারতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে চার বছর ধরে প্রিপারেশন নেওয়ার সুযোগ থাকে কেন্দ্রীয় বোর্ডের ছাত্র ছাত্রীদের। দ্বাদশ শ্রেণী পাশের পর তাই জেইই (মেনস এন্ড অ্যাডভান্সড) এবং নিট প্রভৃতির মতো উচ্চস্তরের পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার বেশি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের পড়ুয়ারা সেইসব ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে থাকে।
রাজ্য বোর্ডের ছাত্র ছাত্রীদের সমান প্রতিযোগিতায় আনতে এবার দিল্লি বোর্ডের মতো নবম থেকে পছন্দের বিষয় চয়ন করতে পারবে ছাত্র ছাত্রীরা। তার জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে নতুন শিক্ষা কমিটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু দশমের পর সবাই গণিত, ভৌতবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয় নিয়ে পড়ে না, তাহলে কেন মাধ্যমিক পর্যায়েও তাদের সেগুলো বাছাই করার অধিকার দেওয়া হবে না। সেক্ষেত্রে সাধারণ বিজ্ঞানের জন্য মাধ্যমিকে বেসিক এবং অ্যাডভান্সড দুই বিভাগ করা উচিত বিজ্ঞান বিভাগের। যেখানে বেসিক সকলের জন্য এবং অ্যাডভান্সড শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে আগ্ৰহী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক রেজাল্ট কবে দেখে নিন
নয়া সিলেবাস কমিটি বিষয়টিকে সবুজ সংকেত দিয়েছে। এছাড়াও, অন্যান্য বিষয়ের সিলেবাসের বদল আসতে পারে। এর জন্য প্রতিটি বিষয়ে একজন করে অধ্যাপককে মেন্টর করা হয়েছে। মোট ৯ জন মেন্টর। সিলেবাস কমিটিতে রয়েছে ২২ জন সদস্য। আগামী ১ লা জুন বৈঠক হবে। এখন দেখার আগামী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা কি তাহলে নতুন সিলেবাসেই হবে?!