বহুদিন স্কুল বন্ধের প্রভাব যে ছাত্রসমাজে বেশ ভালো ভাবেই পড়েছে শিক্ষকগণ তা টের পাচ্ছেন সদ্য সংগঠিত মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্রে। সাদা খাতা জমা দেওয়া, কিংবা সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘পুষ্পা’র বিভিন্ন ডায়ালগ লেখার পাশাপাশি আরও বড় এক সমস্যা সামনে এসেছে। পরীক্ষার খাতার উত্তরের অক্ষর চিনতে হিমসিম খাচ্ছেন শিক্ষকগণ। কোনো কোনো উত্তরপত্রে লিখিত বাক্য বা শব্দ বহু চেষ্টার পর উদ্ধার করতে পারছেন। কোনটি ‘দ’ আর কোনটি ‘ই’-কার চেনা মুশকিল হয়ে উঠছে এমনই জটিলতায় লেখা উত্তর সমূহ। অনেক খাতাতে কিছুই লেখা নাই। সেক্ষেত্রে নাম্বার কিভাবে দেওয়া যায় এ বিষয়েও চিন্তা বাড়ছে পরীক্ষকদের। ফাঁকা খাতায় নাম্বার দেওয়া যাচ্ছে না। অজস্র খাতায় এমন সমস্যা থেকে শিক্ষকদের ধারণা করোনা আবহে বহুদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্ররা অনেকে অক্ষর ভুলে গেছে।
অক্ষর ভুলে যাওয়ার এই সমস্যা পূর্বে প্রাথমিক স্তরের ছাত্রদের মধ্যে দেখা গেছিল। করোনা মহামারী শেষে নিউ নর্মালে স্কুল শুরু হলে বহু প্রাথমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নাম পর্যন্ত লিখতে পারছিল না। এই সমস্যা শুধু প্রাথমিক নয়, মাধ্যমিক স্তরেও ঘটেছে বলে বহু শিক্ষকের মত। করোনা আবহে যারা স্মার্টফোন পায়নি কিংবা গৃহশিক্ষক রাখতে অক্ষম, এমন ছাত্রছাত্রীদের প্রায় দুই বছর পড়াশোনা একেবারে বন্ধ, তারা এক লাইনও লেখেনি। সেক্ষেত্রে অক্ষর ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক এবং এদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনাই ঘটেছে।
আরও পড়ুনঃ
মাধ্যমিক রেজাল্ট কবে বেরোবে?
মাধ্যমিক পাশে শিশু সুরক্ষা দপ্তরে কর্মী নিয়োগ
কিছু উত্তর পত্রের অক্ষর এমনই জড়িয়ে জটিল ভাবে লেখা যে, পরীক্ষক একটিও অক্ষর না পড়তে পেরে নীচে লিখে দেন, “এই লেখা পড়ে উদ্ধার করা অসম্ভব কাজ।” কিছু খাতায় এক লাইনও লেখা নাই, বরং অনেক ছবি আঁকা রয়েছে।ছাত্রছাত্রীরা ছবির মাধ্যমে উত্তরের বিষয়গুলো বোঝানোর চেষ্টা করেছে বলে মনে করেন বহু শিক্ষক। সেক্ষেত্রে ধারণা, অক্ষর ভুলে যাওয়ার কারনে পরীক্ষার হলে ছবি এঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে তারা। কিন্তু এমন উত্তরে তো নাম্বার দেওয়ার নির্দেশ নাই। মাধ্যমিকের উত্তর পত্রে এই সমস্যা পর্ষদকে জানাবেন বলে বলেছেন বহু পরীক্ষক-শিক্ষক।