এক নজরে
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষের নাম: প্রত্যেকটি দেশ বা রাজ্যের জাতীয় কিছু চিহ্ন রয়েছে। ঠিক তেমনি পশ্চিমবঙ্গেরও কিছু জাতীয় চিহ্ন আছে। পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষের নাম কী? পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী অনেক মানুষের কাছে তা অজানা। ভারতের জাতীয় গাছের নাম হল বট গাছ। এই প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষের নাম কী? তা আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষ -এর গুনাবলি, উপকারিতা ও অন্যান্য ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষের নাম কী (West Bengal National Tree)
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষের নাম হল ছাতিম গাছ। পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষ ছাতিম গাছ -এর ইংরেজি নাম হল Devil’s Tree। ছাতিম গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম হল ‘Alstonia Scholaris‘। ‘অ্যাপোসাইনেসি’ বর্গের অন্তর্গত এই ছাতিম গাছ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া সহ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সর্বত্রই দেখা যায়।
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষ ছাতিম গাছ
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বৃক্ষের নাম হল ছাতিম গাছ। গাছটি প্রায় 40 মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছটির বৃদ্ধি অনেক ধীর গতিতে হয়। প্রায় সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছাতে গাছটির সময় লাগে 40 – 50 বছর। গাছের ছাল অসমতল গন্ধহীন ও ধূসর প্রকৃতির। ছাতিম গাছের পাতাগুলো লম্বায় 10-15 সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। বহুশাখা বিশিষ্ট এই গাছটির শাখার শীর্ষভাগে সাদা রঙের ফুল হয়ে থাকে।
ছাতিম গাছের গুণাবলী ও উপকারিতা
১) ছাতিম গাছের ছাল ওষুধ তৈরির কাজে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছাতিম গাছের ছাল ম্যালেরিয়া, বেরিবেরি, ডায়রিয়া, চর্মরোগ প্রকৃতি ক্ষেত্রে ভীষণ উপকারী।
২) ছাতিম গাছের কষের ও ঔষধি গুন রয়েছে। গাছের কষ ক্ষতস্থানে লাগালে সেখান থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুনঃ
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় পাখির নাম
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুলের নাম
৩) রক্তের চাপ কমাতে ছাতিম গাছ খুব উপকারী।
৪) দাঁতের ব্যথার ক্ষেত্রেও ছাতিম গাছ খুব উপকারী। দাঁতের গোড়া ব্যাথা হলে ছাতিম গাছের আঠা দিলে দাঁতের ব্যাথা মুক্তি পাওয়া যায়।
৫) মুখের উপর কালো কালো ব্রনের দাগ সরানোর ক্ষেত্রে ছাতিমের আঠা ব্যবহার করা হয়। ছাতিম গাছের আঠাকে শুকনো করে তা গুঁড়ো করে মুখে লাগালে ব্রনের দাগ সরানো যাবে।
৬) ছাতিম গাছ কুইনাইনের বিকল্প হিসাবেও ব্যবহৃত হয় এবং ক্যান্সার প্রতিষেধক হিসাবেও কাজ করে
৭) উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ছাতিম গাছের ছাল ব্যবহার করা হয়।
৮) সর্দি, হাঁপানি সারাতেও ছাতিম গাছ উপকারী। ছাতিম গাছের ছালের গুঁড়ো দুধের সঙ্গে ফুটিয়ে খেলে রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়।
৯) ছাতিম গাছের কাঠ পেনসিল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ঘরের আসবাবপত্র তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।
ছাতিম গাছের অন্যান্য নাম
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে ছাতিম গাছ। তাই বিভিন্ন স্থানে এই গাছ বিভিন্ন নামে পরিচিত। কেরল, তামিলনাড়ু প্রভৃতি অঞ্চলে এই গাছ ‘পালা’ নামে পরিচিত। ইন্দোনেশিয়ায় ‘পুলাই’, থাইল্যান্ডে ‘সাত্তাবান’ বা ‘টিনপেট’, ফিলিপিন্সে ‘ডিটা’ ও নেপালে ‘ছ্যতিয়ান’ নামে পরিচিত। সংস্কৃত ভাষায় ছাতিম গাছ ‘সপ্তপর্ণী’ নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক বাজারেও ছাতিম কাঠের আলাদা নাম রয়েছে – ‘হোয়াইট-চিজ উড’ বা ‘শ্বেত-নমনীয় কাঠ’।
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষ (FAQs)
প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় বৃক্ষের নাম কি?
উত্তর: ছাতিম গাছ
প্রশ্ন: ছাতিম গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম কি?
উত্তর: Alstonia Scholaris (অ্যালস্টোনিয়া স্কলারিশ)
প্রশ্ন: ছাতিম গাছ কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ সহ এই গাছ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড প্রভৃতি স্থানে দেখতে পাওয়া যায়।