এদিন সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি শংসাপত্র সম্পর্কিত মামলায় রাজ্য সরকারকে নোটিশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। কয়েকদিন আগেই ওবিসি সার্টিফিকেট মামলা -য় ২০১০ সালের পরে জারি হওয়া সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দারত্ব হয়েছিল রাজ্য সরকার। এদিন সেই মামলার শুনানিতে বিরাট ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট মামলায় রাজ্যকে নোটিশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গোটা বিষয়টির ব্যাখ্যা করে হলফনামা জমা করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
এই মামলায় রায়দানের দিন কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছিল, ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন আইন ১৯৯৩ অনুসারে ওবিসিদের তালিকা তৈরি করতে হবে। ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত যারা ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন শুধুমাত্র তাদেরই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। এদিকে চাকরিতে বা অন্য কোনও জায়গায় ২০১০ সালের পর জারি হওয়া ওবিসি শংসাপত্র আর গ্রাহ্য হবে না জানিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে এই সময়ের মধ্যে জারি শংসাপত্রের মাধ্যমে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বহাল থাকবে। উল্লেখ্য, হাই কোর্টের নির্দেশের ফলে প্রায় ৫ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে রাজ্যে।
আরও পড়ুনঃ এই মুহূর্তের সমস্ত সরকারি চাকরির খবর
রিপোর্ট অনুযায়ী, ঠিক কি ধরনের সমীক্ষা করে ৭৭ টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল সেই ব্যাখ্যাই হলফনামা আকারে আদালতে জানাতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। প্রসঙ্গত এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট নিজের রায়ে জানিয়েছিল, ২০১০ সালের পরে যে সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে তা যথাযথ আইন মেনে বানানো হয়নি। সেই কারণেই ২০১০ সালের পর থেকে প্রাপ্ত সব শ্রেণীর ওবিসি সংরক্ষণ ও বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নিজেদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক কারণে নির্দিষ্ট কিছু মুসলিম সম্প্রদায়কে ভোটব্যাঙ্ক বানিয়ে এই সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী ওয়েলফেয়ার কমিশন তাড়াহুড়ো করে এই সংরক্ষণের সুপারিশ করে।
রাজ্য সরকারের হলফনামা জারি করার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে দিন সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী সপ্তাহে শুক্রবার। যেদিন সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ জারি করার পর যথেষ্ট চাপে পড়ল রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলায় রাজ্য সরকারের কোনরকম স্বস্তি পাওয়ার পথ বন্ধ হল বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সন্তোষজনক উত্তর না পেলে পরবর্তী সময়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া রায়কেই বহাল রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ওবিসি সার্টিফিকেট সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে রাজ্য সরকারের যে সমস্ত নিয়োগের পরীক্ষা স্থগিত আছে সেগুলি আগামী দিনেও স্থগিত থাকার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।