অন্যান্য খবর

কবে শেষ হবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা? চিন্তার ভাঁজ চাকরিপ্রার্থীদের কপালে

Advertisement

‘হিমশইলের চূড়া’ শব্দবন্ধটির সঙ্গে আমরা বাঙালিরা সবাই অল্পবিস্তর পরিচিত। সাম্প্রতিক সময়ে এই ‘হিমশইলের চূড়া’ শব্দটি আমরা সংবাদ মাধ্যমে প্রায় প্রাত্যহিক শুনছি। ইতিমধ্যে আপনারা সবাই জানেন মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলছে জোর কদমে। তদন্ত চালাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। প্রায়দিন তাদের তদন্তে উঠে আসছে রাজ্যের হেভিওয়েট কর্তা ব্যক্তিদের নাম। যাদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন তদন্তকারী সংস্থার হাতে। আবার সংশ্লিষ্ট মহল বলছে তালিকা খুব বড়, আরও হেভিওয়েট ব্যক্তিদের গ্রেফতারী শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাদের কথায় যেটুকু তদন্ত হয়েছে, যা কিছু তথ্য সামনে এসেছে এবং যারাই গ্রেফতার হয়েছেন সেটা ‘হিমশৈলের চূড়া’ মাত্র। দুর্নীতির বহর এর চেয়ে ঢের বেশি। দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের শাস্তি দিক আদালত।

উল্লেখ ২০১৭ সালের গোড়ার দিকে এই নিয়োগ দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে আসে। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যের প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামেন একাংশের চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনের সময়ে একাধিক বার পুলিশের হেনস্থার স্বীকার হয়েছেন তাঁরা। পরবর্তীতে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত মামলা গ্রহণ করে সিবিআই তদন্তের আদেশ দেয়। সেই মোতাবেক দীর্ঘ সময় সিবিআই তদন্ত চালায় এই দুর্নীতির রহস্য ভেদের লক্ষ্যে। তবে তদন্তের মোড় ঘুরে যায় গত বছর এই তদন্তে ইডি যোগ দেওয়ার পর। এই নিয়োগ দুর্নীতির পেছনে যে কয়েকশ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপ হয়েছে তারই প্রমাণ জোগাড় করে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জীকে গ্রেফতার করে সংস্থা। এরপরেই গতি পায় তদন্ত, গ্রেফতার হতে থাকেন রাজ্যের হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রী সহ তাদের ঘনিষ্টরা।

আরও পড়ুনঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিরাট হার রাজ্যের

ইতি মধ্যে রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রী এই মামলায় জেল খাটছেন। তবুও চিন্তার ভাঁজ সরছে না যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কপাল থেকে। তাঁদের কথায় তদন্ত দীর্ঘ পথ অতিক্রান্ত করলেও সেরকম কোনো আশার আলো এখনো দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা। গ্রেফতার হচ্ছেন নেতা মন্ত্রীরা, উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বহু ক্ষেত্রেই প্রমান হচ্ছে দুর্নীতির কথা তবুও তাঁদের নিয়োগ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ করছে না আদালত। এর ফলে অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই চাকরির বয়স উত্তীর্ণ, অনেকেই দাঁড়িয়ে আছেন বয়স উত্তীর্ণ হওয়ার দোরগোড়ায়। এত কিছুর পরেও তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত সঠিক কোনো নির্দেশ না আসায় চিন্তার ভাঁজ চওড়া হচ্ছে তাদের কপালে। মামলার নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে হাইকোর্টের একাধিক আইনজীবী জানাচ্ছেন, দ্রুত তদন্তকে শেষ করে দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের হাজতবাস করানোর মত অসংখ্য তথ্য এবং প্রমাণ তদন্তকারী সংস্থার হাতে আছে। তাঁরা আশা করছেন দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দ্রুত এই দুর্নীতির তদন্ত শেষ করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। এমতবস্থায়, কবে শেষ হবে এই পর্বতের মত দুর্নীতির তদন্ত, কবে অযোগ্যদের সরিয়ে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেবে আদালত সেদিকে তাকিয়েই দিন গুনছেন আন্দোলনরত যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা।

কবে শেষ হবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা

Related Articles