ভারতের ঐতিহাসিক অধ্যায়। চাঁদের মাটিতে পাড়ি জমিয়েছে ভারতের মহাকাশযান ‘চন্দ্রযান ৩’। গত ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটা থেকে দুপুর ২টো ৩৫ মিনিট নাগাদ চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ‘চন্দ্রযান ৩’। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর আগের অভিযান ‘চন্দ্রযান ২’ ব্যর্থ হওয়ায় পর তুমুল প্রস্তুতি চলে। আগের ভুল ত্রুটি মেরামত করে ফের চাঁদ ছোঁয়ার লক্ষে প্রস্তুত হয় ‘চন্দ্রযান ৩’। ১৪ তারিখ ভারতবাসীর অপেক্ষা আর আকাঙ্ক্ষা জড়িয়ে রওনা দেয় ইসরোর মহাকাশযান। চাঁদের দক্ষিন মেরুর অজানা রহস্য উন্মোচন করবে ‘চন্দ্রযান ৩’। এই মিশনের বাজেট প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা। এখন ভারতবাসীর মনে একটাই প্রশ্ন, কবে চাঁদে পৌছবে ‘চন্দ্রযান ৩’? অবশেষে এ বিষয়ে মুখ খুলেছে ইসরো।
চন্দ্রযান ৩ কবে চাঁদে পৌছবে?
১৪ তারিখ ‘চন্দ্রযান ৩’-এর সফল উৎক্ষেপণের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইসরো প্রধান এস সোমনাথ বলেন, পয়লা অগাস্ট থেকে চাঁদের কক্ষপথে ‘চন্দ্রযান ৩’ কে প্রবেশের প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা করেছি আমরা। সেইমতো সব কিছু ঠিক থাকলে আশা করা যাচ্ছে, আগামী ২৩ অগাস্ট বিকেল ৫ টা ৪৭ মিনিট নাগাদ চন্দ্রপৃষ্ঠে ল্যান্ড করবে ‘চন্দ্রযান ৩’। পাশাপাশি এও জানা যাচ্ছে, ‘চন্দ্রযান ২’ মিশন থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের মিশনে একাধিক গঠনগত ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। যোগ করা হয়েছে অতিরিক্ত সেন্সর ও ক্যামেরা।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে মোট কয়টি দেশ রয়েছে?
চাঁদের দুই মেরুর মধ্যে দক্ষিণ মেরুর রহস্য এখনও ভেদ করতে পারেনি মানুষ। রহস্যাবৃত চাঁদের এই দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ড করবে ‘চন্দ্রযান-৩’। চাঁদের এই মেরু রুক্ষ ও পাথুরে। এখানে রয়েছে বিশালাকার গর্ত ও পাহাড়। এই অংশের মাটি, তাপমাত্রা ও রাসায়নিক উপাদান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। এছাড়া, পৃথিবীতে চাঁদের আলোর বিচ্ছুরণ সম্পর্কিত তথ্যের অনুসন্ধান চালাবে ‘চন্দ্রযান ৩’। সাধারণত এর আগে চাঁদের এই অংশে পরীক্ষা চালায়নি কোনো দেশ। তাই ভারতের এই মিশন সফল হলে ভারতই হবে প্রথম দেশ যাঁরা চাঁদের দক্ষিন মেরুর রহস্য সমাধানে অনুসন্ধান চালিয়েছে। এই অভিযানের সফলতার সঙ্গে প্রচুর অজানা তথ্যের ভাণ্ডার খুলে যাবে গোটা বিশ্বের সামনে। পাশাপাশি, চতুর্থ দেশ হিসেবে চন্দ্রপৃষ্ঠে সফল অবতরণের খাতায় নাম তুলবে ভারতবর্ষ।
আরও পড়ুনঃ বর্তমানে কোন দেশের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি?
বর্তমানে ‘চন্দ্রযান ৩’-এর সফল ল্যান্ডিংয়ের অপেক্ষায় দিন গুনছেন ভারতবাসী। প্রতিটা মুহূর্ত উত্তেজনায় কাটছে ইসরো আধিকারিকদের। শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্ব অপেক্ষা করছে ভারতের মিশন সফলতার। কারণ এর সঙ্গে সঙ্গে চন্দ্রপৃষ্ঠের রহস্য উন্মোচন যেমন সম্ভব হবে তেমনই এটি ভবিষ্যত মহাকাশ গবেষণায় গতি আনবে।