আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের এই ২৮ তারিখ দিনটিকে দেশের ‘জাতীয় বিজ্ঞান দিবস’ (National Science Day) হিসেবে পালন করা হয়। পদার্থ বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামনের রামন এফেক্ট আবিষ্কারের সম্মানে এই বিশেষ দিন উদ্যাপন করা হয় দেশজুড়ে। নোবেলজয়ী ভারতীয় বিজ্ঞানী সিভি রামন (C. V. Raman) আবিষ্কৃত রামন এফেক্টের আবিস্কারকে চিরস্মরণীয় করে রাখতেই এই বিশেষ দিনটিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই আবিষ্কারের জন্য ১৯৩০ সালে রামন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। এবছরের জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের থিম ‘উওম্যান ইন সায়েন্স’।
একদিন জাহাজে করে লন্ডনে যাওয়া আসার পথে বিশাল সমুদ্রের রূপ দেখে মুগ্ধতার পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল রমনের মন। গভীর সমুদ্রের রঙ দেখে তাঁর মনে প্রশ্ন জাগল এই ঘন নীল রঙের প্রকৃত রহস্য কী? ইতিপূর্বে লর্ড রেলেই আকাশের নীল রঙের বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন অণুর সাথে আলোর কণার বিক্ষেপণের ফলে নীল বর্ণের আলোক তরঙ্গ বেশি দেখা যায় বলেই দিনের বেলায় আকাশের রঙ নীল। সমুদ্রের নীল রঙ সম্পর্কে লর্ড রেলেইর তত্ত্ব বেশ সরল। তাঁর মতে সমুদ্রের রঙ আসলে সমুদ্রের জলে আকাশের রঙের প্রতিফলন। রমন লর্ড রেলেইর এ তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত করেন জাহাজে বসে করা কয়েকটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে।
একটি পোলারাইজিং প্রিজমের মাধ্যমে সমুদ্রের জলে আকাশের প্রতিফলন আড়াল করার পরেও দেখা গেল সমুদ্রের জলের রঙ ঘন নীল – যেন জলের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে নীল রঙ। ফলে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে সমুদ্রের জলের নীল রঙ আকাশের রঙের প্রতিফলন নয়, জলে আলোককণার বিক্ষেপণের ফল। তিনি সমুদ্রের বিভিন্ন গভীরতা থেকে জল সংগ্রহ করে বোতল ভর্তি করে নিয়ে আসেন কলকাতায়। প্রিজম, টেলিস্কোপ ইত্যাদি নিয়ে গভীর সমুদ্রে রঙের খেলা পর্যবেক্ষণ করতে করতে অনেক উপাত্ত সংগ্রহ করেন রমন। কলকাতায় ফিরে এসে তরল পদার্থে এক্স-রে এবং দৃশ্যমান আলোকের বিক্ষেপণ সংক্রান্ত গবেষণায় মেতে ওঠেন তিনি। সেই গবেষণার ধারাবাহিকতাতেই আবিষ্কার হয় রমন এফেক্ট।
আরও পড়ুনঃ
রাজ্যের কলেজে ক্লার্ক ও গ্রূপ-ডি কর্মী নিয়োগ
WBCS Exam 2022 Notification out
বন দপ্তরে কর্মী নিয়োগ চলছে
রমন এফেক্ট আলোক তরঙ্গের অজানা পথ খুলে দিয়েছে। শক্তির স্তর এবং অণু ও পরমাণুর গঠন বুঝতে অনেক সহায়তা করেছে। পদার্থ বিজ্ঞানের অনেক শাখায় রমন এফেক্ট কাজে লাগছে। জীববিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞানেরও অনেক শাখায় রমন এফেক্ট কাজে লাগিয়ে অনেক নতুন নতুন গবেষণা হচ্ছে। রমন এফেক্ট আবিষ্কারের দিনটিকেই জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে পালন করা হয়।